পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ) জিয়াউল হককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। বায়ু দূষণ রোধে পরিবেশ অধিদফতর কি কি পদক্ষেপ নিচ্ছে সে ব্যপারে আগামী ১০ এপ্রিল হাইকোর্টে হাজির হয়ে তাকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এ সময় ঢাকার বয়ূদূষণ রোধে সিটি কর্পোরেশন এবং পরিবেশ অধিদফতরের নেয়া পদক্ষেপে হাইকোর্ট অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। ঢাকা সিটি (উত্তর ও দক্ষিণ) কর্পোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নুরুন্নাহার আক্তার এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ একটি রিট করেন। পরে ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই রিটের প্রেক্ষিতে রাজধানীতে যাদের কারণে বায়ুদূষণ হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালানোর জন্য পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসাথে যেসব এলাকায় ধূলাবালি বেশি, সেসব এলাকায় সিটি কর্পোরেশনকে সপ্তাহে অন্তত দুইবার পানি ছিটানোর এবং অন্যান্য জায়গায় যেসব নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয়েছে সেগুলো ঢেকে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
ওই নির্দেশ অনুযায়ী দুই কর্তৃপক্ষ কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা এফিডেভিট আকারে বুধবার হাইকোর্টে দাখিল করেন।
আদেশের পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, আজ পরিবেশ অধিদফতরের ডিজি’র পক্ষে এফিডেভিট দেয়া হয়েছে। সেখানে তারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে কি কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা উল্লেখ করেছেন। আর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সিটি করপোরেশন যে এফিডেভিট দাখিল করেছে তা সঠিক হয়নি। তারা আদালতে কয়টা ছবি দিয়ে বলেছে, কোথায় কোথায় তারা পানি ছিটিয়েছে। কিন্তু আদালতের যেভাবে নির্দেশ ছিল সেভাবে তারা করেনি। তারা পানি ছিটায়নি। বাংলা একাডেমিতে পানি ছিটানোর কথা তারা বলেছে। কিন্তু মেলা হলে বাংলা এতকাডেমিতে এমনিতেই পানি ছিটানো হয়। এ কারণে আদালত আবারো ডিজি এবং সিটি কর্পোরেশনকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।
এছাড়া বায়ু দূষণ নিয়ে ডেইল স্টারে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছি; যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বৃতি করে বলা হয়েছে, ঢাকা শহর বায়ু দূষণের দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় শহর। ওই প্রতিবেদনে পরিবেশ অধিদফতরের একজন পরিচালক বলেছেন যে, এই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই প্রতিবেদনটি সঠিক না।
তখন আদালত বললেন, তিনি যে বললেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট সঠিক না, আমরা তো দেখতে পাচ্ছি প্র্যাকটিক্যালি, ঢাকা শহরের কি অবস্থা। সেই ব্যপারে পরিবেশ অধিদফতর কি পদক্ষেপ নিচ্ছে? পরিবেশ অধিদফতর তো কোনো কাজ করছে না। যার ফলে মারাত্মক বায়ু দূষণ হচ্ছে। পরিবেশ অধিদফতর যদি কাজ করতো তাহলে তো মানুষের এই অবস্থা হতো না। কাজ না করলে আপনার ভবিষ্যত বংশধরদের রক্ষা করতে পারবেন না। এদেশের অনেকেই তো বিদেশে সেকেন্ড হোম করছে, তারা চলে যাবে। আমরা যারা এদেশে থাকব তাদের জন্য তো একটি শুদ্ধ বায়ু সেবনের পরিবেশ যদি না থাকে তাহলে আমাদের কারো জীবন নিরাপদ থাকবে না। ফলে অবশ্যই আপনাদের সঠিকভাবে কাজগুলো করতে হবে।