ইসরাইলের পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সকালে তারা জেরুসালেমের আল আকসা মসজিদ খুলে দিয়েছে। ইসরাইলের একটি থানায় হামলার প্রেক্ষিতে আল আকসা মসজিদের গেটগুলো বন্ধ করে দেয়ার একদিন পর তারা তা খুলে দেয়।
ফিলিস্তিনি একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, শিশুরা আতশবাজি নিয়ে খেলার এক পর্যায়ে আগুনের সূত্রপাত্র হয়। এতে কারো আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ইসরাইলি পুলিশ কড়াকড়ি করতে থাকলে এক পর্যায় তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। এ সময় ইসরাইলি পুলিশ দুই ফিলিস্তিনিকে আটক করে।
ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক দলগুলো জানায়, মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে তৃতীয় পবিত্রতম স্থান এই আল-আকসাকে ঘিরে প্রায়ই সংঘর্ষ হচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি দমনমূলক নীতির কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ফাতাহ আন্দোলনের মুখপাত্র আতেফ আবু সাইফ এক লিখিত বিবৃতিতে বলেন, আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের বাধা, দখলদারিত্ব, হামলা নির্যাতন এগুলোর মাধ্যমে এই পবিত্র ভূমির ব্যপারে আমাদের যে প্রতিজ্ঞা রয়েছে তা থেকে আমরা দূরে সরে যাবো না।
এ বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, জেরুসালেমে ইসরাইলের এমন নির্যাতনের অন্যতম কারণ হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছে। আন্তর্জাতিক চুক্তি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনার পরও এক্ষেত্রে তারা কোনো কথাই বলছে না।
ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ গ্রুপ হামাস এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, মানুষের যখন ইচ্ছা আল-আকসায় প্রবেশ ও বের হওয়ার স্বাধীনতা দেয়ার আহ্বান জানান।
ফিলিস্তিনের ন্যাশনাল ইনিশিয়াটিভ মুভমেন্টের নেতা মুস্তাফা বারঘৌতি ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানান। তিনি বলেন, মুসলমানদের পবিত্র স্থানগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করার যে লক্ষ্য নিয়ে ইসরাইল এগুচ্ছে, ফিলিস্তিনিরা ঐকবদ্ধ হয়ে তাদের সে অপচেষ্টা ব্যর্থ করে দিতে পারে।
এর আগে গত মঙ্গলবার জেরুসালেমের আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রার্থনারত ফিলিস্তিনিদের লাঞ্ছিত করে ইসরাইলি সেনারা। এ সময় তাদেরকে সেখান থেকে জোর করে বের করে দিয়ে অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেম থেকে আল আকসা মসজিদে প্রবেশের সব পথও বন্ধ করে দেয় তারা।
জর্ডানভিত্তিক জেরুসালেমের ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ফিরাস দিবস এক বিবৃতিতে জানান, ‘হঠাৎ করেই ইসরাইলি সেনাদের দল আল আকসা প্রাঙ্গণে তাণ্ডব সৃষ্টি করে এবং সেখানে থাকা নামাজরত ফিলিস্তিনিদের জোর করে বের করে দিয়ে প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেয়।’
ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ইসরাইলি সেনাদের হাতে আল আকসা মসজিদের পরিচালক এবং জেরুসালেমের আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ওমর কিসওয়ানি এবং শেইখ ওয়াসেফ আল বাকরিও লাঞ্ছিত হন। এ সময় তাদের এ হামলায় অন্তত ১০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। এছাড়া ইসরাইলি সেনারা ফিলিস্তিনি নারীদের ওপরও চড়াও হয়।
সম্প্রতি আল আকসা ফিলিস্তিনিদের জন্য বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইল। তারই অংশ হিসেবে মাঝে মধ্যেই এ ধরনের হামলা করা হচ্ছে অভিযোগ করেছে ফিলিস্তিন। সূত্র : আলজাজিরা