‘মানহানির’ অভিযোগ এনে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন-আরসিবিসি যে মামলা করেছে, তাকে সময়ক্ষেপণের কৌশল হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘তাদের ওই মামলা নিয়ে আমরা মোটেও উদ্বিগ্ন নই। আমাদের টাকা উদ্ধারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা আমরা অব্যাহত রাখব।’
তিন বছর আগে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের আশায় গত ১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তার জবাবে আরসিবিসি মানহানির অভিযোগ এনে গত ৬ মার্চ ফিলিপাইনের সিভিল কোর্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে পাল্টা একটি মামলা করে বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ফিলিপাইনের ব্যাংকটি বলছে, তাদের কোম্পানির সুনাম ও ভাবমূর্তির ওপর বার বার ‘অশুভ আক্রমণ’ চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ কোটি পেসো (১৯ লাখ ডলার) দাবি করা হয়েছে মামলায়।
এক বিবৃতিতে আরসিবিসি বলেছে, ‘টাকা আদায় করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বিরাট এক ষড়যন্ত্র শুরু করেছে, সেজন্য তারা আরসিবিসির সুনাম ক্ষুণ্ন করতে, ভাবমূর্তি নষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছে। কিন্তু যে টাকার জন্য এটা তারা করছে, তা কখনোই আরসিবিসির কাছে ছিল না, ওই টাকার দায়ও আরসিবিসির নয়।’
চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের আশায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কৌঁসুলি আজমালুল হোসেন কিউসির নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিনিধিদল গত ৪ মার্চ ফিলিপাইনে গিয়েছিল। যাওয়ার আগে আজমালুল হোসেন কিউসি জানিয়েছিলেন, মামলা করলেও এবার তারা বিবাদিদের সাথে সমঝোতা করে অর্থ ফেরত পাওয়ার চেষ্টা চালাবেন। এর দুই দিনের মাথায় ৬ মার্চ ফিলিপিন্সের সিভিল কোর্টে পাল্টা এই মামলা করে আরসিবিসি।
আজ বুধবার আরসিবিসির সাথে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিধি দলের।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। সুইফটের নিরাপত্তাব্যবস্থা হ্যাক্টড করে পাঁচটি সুইফট বার্তার মাধ্যমে চুরি হওয়া এ অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া দুই কোটি ডলার ফেরত আসে। তবে ফিলিপাইনে যাওয়া আট কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে এখনো ফেরত আসেনি ছয় কোটি ৬০ লাখ ডলার।