বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো হেনস্থা দেশটির আর কোনো প্রেসিডেন্টকে হতে হয়নি। সাধারণত বড় ধরনের কোনো অপরাধের প্রেক্ষিতে দেশটির প্রেসিডেন্টদের ইমপিচ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ধরা হয় সেটি তার জন্য চরম অবমাননাকর বিষয়। তাই ইমপিচের কথা উঠলেই প্রেসিডেন্টদের মান-সম্মান নিয়ে টানাটানি পড়ে যেত। কিন্তু বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে এ ইমপিচমেন্টেরও যোগ্য মনে করছেন না মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।
এক মার্কিন দৈনিককে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ট্রাম্প সম্পর্কে ওই মন্তব্য করেন পেলোসি। তার মতে, ট্রাম্প দেশ চালানোর জন্য একেবারেই উপযুক্ত নন। কিন্তু তাই বলে তাকে ইমপিচও করা যায় না। কারণ উনি সেটারও যোগ্য নন।
এর ব্যাখ্যাও দেন পেলোসি। তিনি বলেন, ‘আমি কারো ইমপিচমেন্টের পক্ষে নই। এটি একটি বিষয়। অন্যদিকে ইমপিচমেন্ট এমন একটা ব্যাপার, যা নিয়ে দেশের জনগণ দু’ভাগে ভাগ হয়ে যেতে পারে। ফলে এমন একটা পদক্ষেপ তখনই নেয়া যায় যখন তেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের সামনে আসে। ট্রাম্পের জন্য দেশ দু’ভাগ হয়ে যাবে, এটা ভাবাই যায় না। উনি কিছুতেই এর যোগ্য নন।
পেলোসি আরো বলেন, ‘নৈতিকভাবে, বুদ্ধি-বিবেচনার দিক থেকে এবং আগ্রহের বিষয় হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ট্রাম্প একেবারেই অযোগ্য। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে তাকে মেনে নেওয়া যায় না।। তিনি বলেন, আমি কখনোই ভাবিনি, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন। এ দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি কোনোভাবেই উপযুক্ত নন।
এর আগেও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করেছেন পেলোসি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বারের মতো ধারালো আক্রমণ স্পিকারকে আগে করতে দেখা যায়নি। এর কিছু দিন আগেই হাউসের বিচার বিভাগীয় কমিটির চেয়ারম্যান জেরি ন্যাডলার বড় ধরনের তদন্তের জন্য চিঠি দিয়েছেন ৮১ জনকে। সে চিঠি গিয়েছে হোয়াইট হাউস, বিচার বিভাগ, উচ্চপদস্থ প্রচার অফিসার, ট্রাম্প প্রতিষ্ঠানের অফিসার এবং প্রেসিডেন্টের ছেলেদের কাছে। দুর্নীতি, বিচারকাজে বাধাদান এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মতো অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। ডেমোক্র্যাটদের দাবি, ট্রাম্পের প্রথম দু’বছরের মেয়াদে প্রশাসনিক কাজ সে ভাবে খতিয়ে দেখাই হয়নি। ওই সময়টিতে মার্কিন কংগ্রেসের উভয় কক্ষেই রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।
মেরিল্যান্ডের ডেমোক্র্যাট সদস্য জেমি রাসকিন বলেছেন, ‘ঘুষ নেয়া, দেশদ্রোহ বা এই ধরনের বড় ধরনের অভিযোগ উঠলে সংবিধান অনুযায়ী, ইমপেচমেন্টের দাবি ওঠে। তাই সংবিধান মেনে দেশের মানুষের পক্ষ সেই দাবি উঠলে ইমপিচমেন্ট হতেই পারে।’ এক্ষেত্রে ন্যান্সি পেলোসির চেয়ে তার মত কিছুটা ভিন্ন। তার মতে, ‘ইমপিচমেন্ট সব সময় দেশকে বিভক্তই করে না, অনেক ক্ষেত্রে আবার দেশকে একজোটও করে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের বেলায় কিন্তু তেমনটাই হয়েছিল।’ সূত্র : গার্ডিয়ান