যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রথম বর্ষের র্যাগিং ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দুইজনকে আজীবন ও সাতজনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ও ভুক্তভোগী সকলেই যবিপ্রবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের ছাত্র।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ আহসান হাবীবের সই করা এক অফিসে আদেশে তাদের বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তাদের অপরাধের বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এর আগে র্যাগিং, যৌন নিপীড়ন ও বিকৃত যৌনাচারে বাধ্য করার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি ভুক্তভোগী ১২ জনসহ মোট ৪০ জন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি। একইসঙ্গে এসব ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের সঙ্গেও তদন্ত কমিটি কথা বলে। অভিযুক্ত ছাত্ররা তদন্ত কমিটির সাথেও অসংলগ্ন, ঔদ্ধ্যত্বপূর্ণ আচরণ করেন। একইসাথে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করায় র্যাগিংয়ের শিকার ছাত্রদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহারে বাধ্য করানো হয়।
র্যাগিংয়ের শিকার হওয়া একজন ছাত্র ঘটনার পর থেকে চিকিৎসাধীন। ভুক্তভোগী অন্যরাও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং তারা স্বাভাবিক হতে পারছেন না। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে র্যাগিং রোধ ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আচরণবিধির ৩ এর (এ ও বি) অনুযায়ী বহিষ্কারের এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আজীবন বহিষ্কৃত হওয়া ছাত্ররা হলেন- যবিপ্রবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোঃ অলি উল্লাহ ও মাহমুদুল হাসান। দুই বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রজিবুল হক রজব, এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন- চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মোঃ আবদুল কাদের, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আল মুজাহিদ আফ্রিদি, মোঃ শহিদুল ইসলাম, মোঃ রোকনুজ্জামান রোকন, অনুপ মালাকার এবং মোঃ শামীম বিশ্বাস।
একইসঙ্গে এ ঘটনায় পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবু বক্কর সিদ্দিকী, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শতদল পাল ও ইমরান হোসেনকে চূড়ান্তভাবে সতর্ক করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে র্যাগিংসহ শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবে না মর্মে পরবর্তী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের আইনানুগ অভিভাবক ও নিজে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার না করলে ওই তিনজন ছাত্রকেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানানো হয়।
এর আগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) ছয় নবীন শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী একটি মেসে ডেকে নিয়ে অর্ধনগ্ন করে রাতভর র্যাগিং করায় ১৯ শিক্ষার্থীকে শাস্তি দিয়েছিল প্রশাসন। এর মধ্যে ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।