ভোটের আগের রাতেই ছাত্রদের ভোট চুরি, হামলা ও অনিয়মের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে কলঙ্কিত করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।
জেএসডি: জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন এক বিবৃতিতে বলেন, আওয়ামী শাসনামলে ডাকসু নির্বাচন কখনোই সুষ্ঠু হয়নি। ৭৩ এর ডাকসু নির্বাচনে জেএসডি সমর্থিত ছাত্রলীগের মাহবুব-জহুর পরিষদ ৮০ ভাগ ভোট পেয়ে যখন বিজয়ী হচ্ছিল তখন ব্যালট বাক্স হাইজ্যাক করে এ বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয়।
২৮ বছর ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবকদের দীর্ঘ প্রত্যাশিত ডাকসু নির্বাচন দিতে বাধ্য হলেও ভোট গ্রহণের স্থান নিয়ে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের মতামত প্রত্যাখ্যান, আজকে নির্বাচনের দিনও বিরোধী প্যানেলের প্রার্থীদের উপর হামলা, আগের রাতে ব্যালট বাক্সে ভোট ভরে রাখা ইত্যাদির মধ্য দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের মত ছাত্রদের নির্বাচনও এই সরকারের আমলে সুষ্ঠু হবেনা তা পরিষ্কার হয়ে গেল। নেতৃবৃন্দ বিতর্কিত নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করে নতুন ভাবে নির্বাচনের সময়সূচী প্রদানের দাবি জানান।
খেলাফত মজলিস: ডাকসু নির্বাচনে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের পক্ষে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে খেলাফত মজলিসের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত আজকের ডাকসু নির্বাচনে ৩০ ডিসেম্বরের ভুয়া নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। একদলীয় স্বৈরাচারী দুঃশাসনের ফল হচ্ছে ডাকসুর এ কলংকিত নির্বাচন। ভোট কারচুপি ও অনিয়মের ঘটনা ইতিহাসে আরেকটি কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে নির্বাচন বাতিল করে ডাকসু নির্বাচনের পুনঃতফসিল ঘোষণার দাবি জানান।
ছাত্রশিবির: ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন, সেক্রেটারি জেনারেল সিরাজুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ও সেক্রেটারি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের মত মধ্য রাতের ভোটের পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে ডাকসু নির্বাচনে। জাতীয় নির্বাচনে অবৈধ সরকার জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল আর একইভাবে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রসমাজের ভোটের অধিকার হরণ করা হয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলোর আপত্তির পরও অস্বচ্ছ ব্যালট বক্সে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ ঘটনা পুরো জাতির জন্য বড় লজ্জার। এই ঘৃণ্য ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। ছাত্রলীগ ছাড়া অন্য সকল ছাত্রসংগঠন এই প্রহসনের ভোট বর্জন করে অবিলম্বে নতুন তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। আমরা তাদের দাবীর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবশ্যই ছাত্রসমাজের ন্যায্য দাবি মানতে হবে। অন্যথায় ছাত্রসমাজ তাদের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ আছে।
ইশা ছাত্র আন্দোলন: ডাকসু নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির ঘটনায় ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন নির্বাচন বর্জন করেছে। গতকাল দুপুর ২টায় সংগঠনের নেতা ও ভিপি প্রার্থী এস.এম.আতায়ে রাব্বী ও জিএস প্রার্থী মাহমুদুল হাসান এক যৌথ বিবৃতিতে ডাকসু নির্বাচনের ভোট বর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।