ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নূরুল হক নূরকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ।
সোমবার ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মো: আখতারুজ্জামানের কাছে এ দাবি জানান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।
সোমবার ভোটগ্রহণ শেষে রাত সাড়ে ৩টার দিকে সিনেট ভবনে এর ফলাফল ঘোষণা করেন ভিসি মো: আখতারুজ্জামান।
ভিপি পদে বিজয়ী হিসেবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নূরুল হক নূরের নাম ঘোষণার সাথে সাথেই বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় ‘ভুয়া’, ‘ভুয়া’ বলে চিৎকার করতে থাকেন তারা।
ছাত্রলীগকর্মীদের বিক্ষোভ, হৈ চৈ-এ ফল ঘোষণায় বিরতি দিতে বাধ্য হন ভিসি।
এক পর্যায়ে সেখানে উপস্থিত ছাত্রলীগ সভাপতি ও সংগঠনটির প্যানেল থেকে ভিপি প্রার্থী রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের ইশারায় বিক্ষোভে বিরতি দেন সংগঠনটির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
এরপর সাধারণ সম্পাদকসহ বাকি পদগুলোতে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন ভিসি। সাধারণ সম্পাদকসহ বাকি ২৪টি পদের একটি বাদে অন্যগুলোতে ছাত্রলীগের প্যানেলের (সম্মিলিত শিক্ষার্থী পরিষদ) প্রার্থীরাই জয়ী হয়েছেন।
ফলাফল ঘোষণা শেষ হলে আবারো বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্রলীগকর্মীরা। এ সময় ‘ভুয়া’, ‘ভুয়া’ স্লোগানের পাশাপাশি শিবিরবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা।
প্রায় আধা ঘণ্টা বিক্ষোভের পর ছাত্রলীগ সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ভিসির পাশে যান। এ সময় ভিসির কাছে নূরকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি করেন রাব্বানী।
তিনি বলেন, একটি প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও কোটা আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছে।
দিনে ডাকসুর ভোটগ্রহণ চলার সময় রোকেয়া হলে ‘ব্যালট উদ্ধারের’ নামে নাটক সংঘটিত করে প্রাধ্যক্ষকে আক্রমণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রাব্বানী।
ওই ঘটনায় একজন সাধারণ শিক্ষার্থী নূরসহ কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছে জানিয়ে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি করেন।
এদিকে, গোলাম রাব্বানী বলেছেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের ইমোশনকে ব্যবহার করে রোকেয়া হলের প্রভোস্টের উপর হামলা চালিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা মামলা করেছে। আমরা ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই।’
ভিসিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী নিষিদ্ধ। আমরা এই ভোট পুনর্বিবেচনার দাবি জানাচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র নূরুল হক নূর সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত বছর বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ব্যানারে জোরালো আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে পরিচিত পান। এই ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়কদের একজন তিনি।