কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় যখন পুরো ভারত এক হয়ে দাঁড়িয়েছিল, তখনও বিষয়টি নিয়ে সমানে রাজনীতি করে গেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সময় পাকিস্তানকে যেমন হুমকি দিয়েছেন, তেমনি শাসিয়েছেন বিরোধী দলগুলোকেও।
কিন্তু ভোটকে সামনে রেখে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় বলা হচ্ছে, এসব কিছু করেও নির্বাচনে সরকার গঠন করার মতো প্রয়োজনীয় আসন পাচ্ছে না বিজেপি ও তার জোট এনডিএ।
এই মুহূর্তে ভোট হলে সম্ভাব্য ফলাফল কী হতে পারে, তা নিয়ে গত রোববার একটি জনমত সমীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে এবিপি নিউজ ও সি-ভোটার। উপমহাদেশজুড়ে সবচেয়ে উত্তেজনাকর সময় অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সমীক্ষাটি করা হয়।
সমীক্ষা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, তারা ৫১ হাজার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রকাশিত সমীক্ষা রিপোর্টো বলা হচ্ছে, ভারতজুড়ে ২২০টি আসন পেতে পারে বিজেপি। আর তাদের জোট এনডিএ পেতে পারে ২৬৪টি আসন। অবশ্য শতাংশের দিক থেকে সবার বেশি ভোট এনডিএ’রই, ৪১ শতাংশ। অন্যদিকে কংগ্রেসের ইউপিএ জোট ৩১ শতাংশ ভোট পেলেও ১৪১টির কাছাকাছি আসন পেতে পারে। সরকার গঠন করতে প্রয়োজন হবে ২৭২টি আসন।
সব মিলিয়ে জনমত সমীক্ষা বলছে, পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান অভিযানের সাফল্য পুঁজি করেও সরকার গড়ার প্রয়োজনীয় ২৭২টি আসন পাচ্ছে না বিজেপির জোট এনডিএ। এতে কংগ্রেসও খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। বরং সরকার গড়ার চাবি থাকছে ইউপিএ ও এনডিএ’র বাইরের আঞ্চলিক দলগুলির হাতেই। সমীক্ষার প্রতিবেদন অনুযায়ী ২৮ শতাংশ ভোট পেতে পারে এই আঞ্চলিক দলগুলো।
এর আগেও কয়েকটি সমীক্ষার ফলে এমন প্রবণতাই চোখে পড়েছিল। নতুন সমীক্ষা বলছে- বালাকোটে বিমানবাহিনীর অভিযান নিয়ে যে জাতীয়তাবাদের ঢেউ তোলা হয়েছে, তাতে এনডিএ বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে না। সম্ভাব্য আসন বাড়লেও তা সামান্যই। এই ধরনের সমীক্ষার ফল অনেক সময় না মিললেও প্রবণতা কিছুটা বোঝা যায়। তবে রাজনৈতিক দলগুলির বক্তব্য, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরেই মূলত ভোটাররা ঠিক করেন, কাকে ভোট দেবেন। তাই ফল বদলাতেই পারে।
এদিকে ভারতের সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। এবার সাত ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এই নির্বাচন। ভারতের নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী এপ্রিল ও মে মাসে মোট সাত ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে’র মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনের মাধ্যমেই গঠিত হবে নতুন লোকসভা। তবে নির্বাচনের ভোট গণনা হবে আগামী ২৩ মে অর্থাৎ সেদিনই জানা যাবে কারা আসছেন আগামী সরকারে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপির বিরুদ্ধে মাঠে আছে কংগ্রেস ও বেশ কিছু আঞ্চলিক দল। এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ উত্তর প্রদেশে বিজেপির বিরুদ্ধে জোট গড়েছে দুটি প্রভাবশালী আঞ্চলিক দল। ৫৪৩ আসনের লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন হবে ২৭২ আসন।