বিএসএমএমইউ-তে যেতে রাজী নন খালেদা জিয়া

মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হলেও তিনি যেতে রাজি হননি বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম রোববার দুপুরে বলেন,‘উনি(বেগম খালেদা জিয়া) ‘না’ করে দিয়েছেন, উনি যাবেন না।’

কারা সূত্র জানায়, গতকাল শনিবার বেগম খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ-তে নেয়ার কথা বললে তিনি অনীহা জানান। তবে তিনি কেন সেখানে যাবেন না সেই কারণ স্পষ্ট করেননি।

পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। রোববার বিএসএমএমইউ হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের বিশেষ কারাগার থেকে বেলা ১২ টার পর যেকোনো সময়ে তাকে বিএসএমএমইউতে নেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে কারাগারসূত্র। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কেবিন ব্লকের ৬২১ ও ৬২২ নম্বর কেবিন খালেদা জিয়ার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

এদিকে, নাজিমুদ্দিন রোডের বিশেষ কারাগারের সামনে দায়িত্বরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কারগার থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। তিনি রেডি হলেই আমরা রওয়ানা দেব। কারাগার ও হাসপাতাল এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য শিগগিরই বিএসএমএমইউতে নেয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার দুপুরে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে কথা বলতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সেই বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ীই তার চিকিৎসা চলছে। যেহেতু এটা আদালতের নির্দেশ, তাই বোর্ড যেমন বলছে তেমনভাবেই সব চলছে।

বিএনপি নেতারা বৈঠকে কী বলেছেন জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে নিতে চেয়েছেন। কিন্তু যেহেতু আদালতের নির্দেশ আছে তাই বোর্ড যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে। তিনি বলেন, ‘আইজি প্রিজনকে বলে দিচ্ছি, বোর্ডের কথা অনুযায়ীই যেন তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়।’

একজন নারী চিকিৎসক একদিন পর পর খালেদা জিয়াকে দেখতে যান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন তার যে সমস্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার কথা বলা হয়েছে সেগুলোর জন্য শিগগরিই তাকে বিএসএমএমইউতে নেয়া হবে। বোর্ডের নির্দেশনা ছিল যে তার কিছু পরীক্ষা করাতে হবে। সেগুলো হয়তো কারাগারের ভেতরে করা সম্ভব হবে না। সেজন্য তাকে হাসপাতালে নেয়া হবে। তার যেন সুচিকিৎসা হয় সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিশেষ আদালত। কারাগারে থাকা অবস্থায় এই মামলায় উচ্চ আদালত তার সাজা আরো পাঁচ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর করে রায় দেন। এছাড়া বিচারিক আদালতের রায়ে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top