ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ্য করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ভারতের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে জিততে পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধের দামামা বাজিয়েছেন তিনি। মোদির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, নরেন্দ্র মোদি মুসলিমদের উপর বর্বরতা ও নৃশংসতা চালিয়ে তাদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। শুক্রবার পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় থার শহরে এক জনসভায় এসব মন্তব্য করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
জনসভায় ইমরান খান আরো বলেন,‘আমি জানি থার শহরের প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী। আমি তাদের অধিকার রক্ষা ও নিরাপত্তার দায়িত্ব নিচ্ছি।’
নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, অতীতে মহাত্মা গান্ধী যেসব রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, বর্বরতা ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে অনশন কর্মসূচী পালন করেছিলেন, বর্তমানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও একই রকম রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও বর্বরতা চালাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর দুটি দেশকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে না দিতে মোদির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জনসভায় ইমরান খান বলেন, পাকিস্তানের মাটিতে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী অপতৎপরতা চালাতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলীয় থার শহরের ছাচরো এলাকায় এবারই প্রথম সফর করেন ইমরান খান।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা কায়েদ-এ আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেছিলেন, পাকিস্তানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমান সরকার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ’র সেই নীতি অনুযায়ীই কাজ করছে। পিটিআই সরকার সমগ্র পাকিস্তানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অঙ্গিকারাবদ্ধ।
উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় ৪২ জনের বেশী ভারতীয় আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য নিহত হয়। হামলার দায় জইশ-ই মোহাম্মদ নামে একটি সংগঠনের উপর চাপায় ভারত।
পরে হামলার জবাব দিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের সীমানা ভেদ করে বালাকোটে হামলা চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারতের দাবি হামলায় অন্তত ৩০০ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। তবে ভারতের এমন দাবি প্রত্যাখান করে পাকিস্তান। পাশাপাশি বিবিসি, রয়টার্স, নিউ ইয়র্ক টাইমস, সিএনএনসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ভারতের এই দাবি সঠিক নয় বলে সংবাদ প্রকাশ করে।
এরপর পাল্টা হামলায় ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। এতে দুই ভারতীয় পাইলট নিহত ও একজন জীবিত আটক হয় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর হাতে। পরে শান্তির বার্তা হিসেবে আটককৃত ভারতীয় পাইলটকে মুক্তি দেয় পাকিস্তান। সূত্র : দ্য ডন।