বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গত ৩০ ডিসেম্বর মিডনাইড ইলেকশনের কথা স্বীকার করার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা প্রমাণ হয়েছে। দেশবাসীর কাছে ইসির মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। এটা বিশ্ববাসীর কাছে অকাট্য দলিল হয়ে থাকবে। শনিবার দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রিজভী একথা বলেন।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, আগামীতে ইভিএমকে বৈধতা দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের জন্যই নির্বাচন কমিশন এখন কাজ করছে। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইভিএম নয়, ইসির সদিচ্ছা আর আন্তরিকতাই যথেষ্ঠ ছিল; কিন্তু ইসি ব্যর্থ হয়েছে।
‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে ব্যবসা করছে’ এমন অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আসল ধারক ও বাহক হচ্ছে বিএনপি। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষকের স্ত্রীকে জেলখানার নির্জন ঘরে আটকে রেখে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীদের এমপি, মন্ত্রী বানিয়েছে এই সরকার। স্বৈরশাসক এরশাদকে অনুগত বিরোধীদলের নেতা বানানো হয়েছে।
রিজভী বলেন, নির্বাচনের দুই মাসের মধ্যেই এখন প্যান্ডোরার বাক্স থেকে আসল ঘটনাগুলো বের হতে শুররু করেছে। থলের বিড়ালকে আর বেশিদিন আটকে রাখতে পারলেন না সিইসি কে এম নুরুল হুদা। আসলে সত্যকে ঢেকে রাখলেও তাতে লাভ হয় না। মিডনাইট নির্বাচনের আসল সত্যটি সিইসি মুখ ফসকেই বলে ফেলেছেন।
রিজভী বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে দস্যুতার আচরণ করেছেন সিইসি। ইভিএম চালু হলে নাকি ভোটের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তির ঝুঁকি কমবে-এমন কথা বলেছেন সিইসি। জনগণের হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কমিশনে ইভিএম মেশিন প্রকল্প অপরিহার্যতা প্রতিপাদন করার জন্যই কি সিইসি ২৯ ডিসেম্বর রাতে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন?
প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, একটি প্রকল্পের যথার্থতা প্রমাণের জন্যই আপনি কি সারাদেশের ভোটারদের ভোটাধিকার কেড়ে নিলেন? আপনার ব্রেইন চাইল্ড প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের আমানতকে আপনি কেড়ে নিলেন?
রিজভী বলেন, সিইসি ৩০শে ডিসেম্বরের রাত থেকেই সুষ্ঠু নির্বাচনের ঝুড়ি ঝুড়ি গালগল্প শুনিয়েছেন মানুষকে। মিডনাইট নির্বাচনের হোতা আপনি। আদর্শগত শুন্যতার কারণে আপনি এতবড় অন্যায়টি করেছেন জনগণের বিরুদ্ধে। এটি অবৈধ সরকারের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার নীতি বাস্তবায়ন করতেই আপনি মহাভোট কেলেঙ্কারীর মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করলেন। আপনার এই বক্তব্যটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে থাকলো জাতির কাছে। তবে মনে রাখবেন-পাপ কখনও বাপকেও ছাড়ে না। আমজনতার কাছে আপনাকে জবাবদিহি করতেই হবে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা আইনজীবী সমিতির দ্বিতীয় দফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, সাত দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা নির্বাচন নজীরবিহীন। ব্যাপকভাবে জালভোট প্রদানের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রথম দফা ও দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে সাত দিনের ব্যবধান করা হয়েছে।