ভারত একটি বড় দেশ। স্বাভাবিকভাবেই অনেক দিক দিয়েই এগিয়ে আছে দেশটি। ভালো খারাপ অনেক দিক দিয়ে। এমনকি ইঁদুরের কর্মকাণ্ডেও দেশটি এগিয়ে আছে অনেক দূর।
যদিও আদালতে ইঁদুরকে মুখ খোলাতে না পারায় অনেক অভিযোগ নিয়েই রয়ে গেছে প্রশ্ন। যেমন- পুলিশের মালখানায় থাকা কয়েক লাখ গ্যালন মদ উধাও হয়ে যাওয়ার দায় চাপানো হয়েছিল ইঁদুরের ওপর। এমনকি উদ্বোধনের আগের দিন একটি বাঁধের ভেঙে পড়ার জন্যও দায়ী করা হয়েছিল ইঁদুরদের। কোনোটিই অবশ্য প্রমাণ করা যায়নি।
কিন্তু এবার এই ক্ষুদ্র প্রাণীগুলো যা করেছে, তাতে তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ করা গেছে। অবশ্য অভিযুক্ত ইঁদুর বা লুণ্ঠিত মাল উদ্ধার করা যায়নি।
ভারতের বিহার রাজ্যে এবার হীরের চুরির অভিযোগে যে পুলিশ এফআইআর করা হয়েছে, তাতে অভিযুক্ত হিসেবে লেখা হয়েছে ইঁদুরের কথাই। পাটনার বোরিং রোডের নবত্রাণ জুয়েলার্স ও ব্রাদার্স নামের একটি গহনার দোকানে হীরের কানের দুল চুরিতে যে ইঁদুরই দোষী, তার প্রমাণ মিলেছে দোকানের সিসিটিভি ফুটেজেই।
এখন তন্নতন্ন করে খোঁজা হচ্ছে ইঁদুরের চুরির মাল। দোকানের ফলস সিলিং থেকে দেয়ালের গর্ত, কিছুই বাদ দেয়া হচ্ছে না। কিন্তু ইঁদুরও হয়তো বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিল। তাই সে সম্পদ এমন জায়গায় রেখেছে যে, এখন পর্যন্ত তার সন্ধান পাওয়া হয়নি দোকান মালিক বা পুলিশের।
এর আগে পুলিশের মালখানা থেকে মদ খেয়ে নেয়া বা বাঁধে গর্ত করে তা ভেঙে দেয়ায় ইঁদুর দলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে তোলপাড় ওঠে পুরো বিহারে। অভিযোগকারীরা সে সময় ইঁদুরের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। তবে এ বার পুলিশের হাতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রমাণ রয়েছে।
গহনার দোকানের কর্মীরা জানান, কয়েকদিন আগে বেশ দামী হীরের কানের দুল চুরি যায়। স্বাভাবিকভাবেই দোকানের কর্মচারীদের সন্দেহ করে কর্তৃপক্ষ। থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। শুরু হয় পুলিশি তদন্ত। পুলিশ তখন দোকানের ভিতরে থাকা তিনটি সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে।
গত বৃহস্পতিবার ওই ফুটেজে দেখা যায়, মুখে করে হীরের গয়নার প্লাস্টিক প্যাকেট নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে ইঁদুর। আর তা এতই সাবধানে করে যে, কারোই নজর সে দিকে পড়েনি। হীরেচোর ইঁদুরের এ কা- দেখে অবাক হয়ে যান দোকানের কর্তৃপক্ষও। দোকানের ফলস সিলিং ভেঙে এখন চলছে গয়নার খোঁজ। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হীরের গয়না পাওয়া যায়নি।
এদিকে নবত্রাণ জুয়েলার্স ও ব্রাদার্সের মালিক ধীরজ কুমার অবশ্য বিষয়টিকে খারাপ হিসেবে দেখছেন না। বরং তিনি বলছেন, ইঁদুর ঈশ্বরেরই একটি প্রতিমূর্তি। সে যে এ কাজের জন্য আমার দোকানটিকে বেছে নিয়েছে, সে জন্য আমি আনন্দিত। এমনকি চুরি যাওয়ার ওই হীরের কানের দুলটি ফেরত পাওয়া গেরেও আমি তা কেদারনাথ মন্দিরে দিয়ে দিব।
এর আগে বক্সার জেলা পুলিশের মালখানায় কয়েক লাখ গ্যালন মদ গায়েব হয়ে যায়। সেই দায় চাপানো হয়েছিল ইঁদুরের ওপরে। সে সময় পুলিশকে অভিযুক্ত করে বিরোধী নেতারা বলেন, ঘুরপথে ওই মদ চোরাবাজারে পাঠিয়ে দিয়েছে পুলিশই। অন্যদিকে ভাগলপুরের কহলগাঁওয়ে সেচ দফতরের বাঁধ উদ্বোধন করার আগের দিন তা ভেঙে পড়েছিল। সরকার সে সময় দায় চাপায় সেই ইঁদুরের ওপরেই। তাদের গর্তের ফলেই বাঁধ ভেঙেছে বলে দাবি করেছিলেন সেচমন্ত্রী ললন সিংহ। সূত্র : এনডি টিভি ও ইন্ডিয়া টুডে