বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশকে এখন উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়। প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, জাতীয় সংসদের স্পিকার-তিন জনই নারী। কেবল রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের দিক থেকে না, শিক্ষা, প্রশাসন, চাকরি, সব ক্ষেত্রেই নারীর অগ্রগতির প্রশংসা করছে সারা বিশ্ব।
বর্তমানে দেশের ৯ জেলায় নারী ডিসিরা দায়িত্ব পালন করছেন। তারা হলেন- সিরাজগঞ্জের ডিসি কামরুন নাহার সিদ্দীকা, নড়াইলের আনজুমান আরা, নরসিংদীর সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, মুন্সিগঞ্জের সায়লা ফারজানা, ফরিদপুরের উম্মে সালমা তানজিয়া, পঞ্চগড়ের সাবিনা ইয়াসমিন, নীলফামারীর নাজিয়া শিরিন, কুড়িগ্রামের মোছা. সুলতানা পারভীন এবং শেরপুরের ডিসি আনার কলি মাহবুব।
মাঠ পর্যায়ে কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে নড়াইলের ডিসি আনজুমান আরা বলেন, ‘আমরা নারী বা পুরুষ হিসেবে নয়; একজন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছি। আমরা মাঠে কাজ করতে গিয়ে সেই ধরনের পরিস্থিতির মুখে পড়িওনি। কাজের ক্ষেত্রে তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা আমি দেখি না। আমরা রাত ১২ পর্যন্তও কাজ করি। সমাজও আমাদের সহযোগিতা করে, আমরাও নিজেরা কমফোর্ট ফিল করছি। এখন আমাদের সমাজ অনেকটাই পাল্টে গেছে।’
কুড়িগ্রামের ডিসি মোছা. সুলতানা পারভীন বলেন, ‘আমি মনে করি কাজের ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের তুলনায় বেশি সিনসিয়ার। কারণ নারীদের চক্ষু লজ্জাটা কম্পারিটিভলি বেশি। কেউ যেন খোটা দিয়ে বলতে না পারে ছেলে হলে পারত মেয়ে দেখে পারে না, এই চিন্তাটা মাথায় রেখে সবসময় কাজ করার চেষ্টা করি।’
তিনি বলেন, ‘ভালো কাজ করলে মানুষের সমর্থন পাওয়া যায়। কাজের ক্ষেত্রে আমি তেমন প্রতিবন্ধকতা পাইনি বা বাধাপ্রাপ্ত হইনি। মানুষের কাছ থেকে হেল্পফুল অ্যাটিচিউডই পেয়েছি।’
‘আমি সবসময় গতানুগতিক চিন্তার বাইরে গিয়ে মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি। মানুষের সহযোগিতায় কাজগুলো সফলভাবে করতে পারছি। আমি এক বছর ধরে ডিসির দায়িত্ব পালন করছি। আমি মনে করি আমি সফল’ বলেন কুড়িগ্রামের ডিসি।
জেলা পর্যায়ে ডিসি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। ডিসি জেলার সাধারণ প্রশাসনিক কার্যক্রম, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং কালেক্টর হিসেবে ভূমি ব্যবস্থাপনা বিষয়গুলো দেখে থাকেন। এ ছাড়া নির্বাচিত সরকারের বিশেষ কর্মসূচি এবং চলমান সব উন্নয়নমূলক কাজে জেলা প্রশাসক তদারকি করে থাকেন।
সাধারণত নির্দিষ্ট সময় উপসচিব হিসেবে থাকার পর ফিটলিস্টভুক্ত এবং সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডে (এসএসবি) নির্বাচিত হওয়ার পর সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনুমোদন সাপেক্ষে কাউকে জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়।
জেলা প্রশাসক যেকোনো বিষয়ে যেকোনো মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এমনকি প্রধানমন্ত্রীকে যেকোনো জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় সরকারের নজরে আনার অনুরোধ বা অবগতি করতে পারেন।