ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারপ্রধানের সাজা

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবিরের সাবেক ব্যবস্থাপক পল ম্যানাফোর্টকে ৪৭ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। ভার্জিনিয়ার জেলা আদালতের বিচারক টি এস এলিস বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করেন। খবর রয়টার্সের।

৪৭ মাস জেলে কাটানোর পাশাপাশি ম্যানাফোর্টকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২ কোটি ৪০ লাখ ডলার এবং জরিমানা হিসেবে আরও ৫০ হাজার ডলার দিতে হবে।

ইউক্রেনে রাজনৈতিক পরামর্শক হিসেবে কাজ করে পাওয়া কয়েক কোটি ডলারের তথ্য গোপন করার ঘটনায় ভার্জিনিয়ার এই আদালত গত আগস্ট মাসে কর ফাঁকি, ব্যাংক জালিয়াতি এবং বিদেশি ব্যাংক হিসাবের তথ্য দিতে ব্যর্থ হওয়ার আট দফা অভিযোগে ম্যানাফোর্টকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল।

এদিকে, বিবিসি জানিয়েছে, অবৈধভাবে লবি করার অভিযোগে ম্যানাফোর্টের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলার রায় হওয়ার কথা রয়েছে আগামী সপ্তাহে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী করতে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়ে তদন্তের সূত্র ধরে ম্যানাফোর্টের অপরাধের তথ্যগুলো বেরিয়ে আসে।

ট্রাম্প প্রশাসনের চাপ সামলে যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের বিশেষ কাউন্সেল রবার্ট মুলার ওই তদন্ত ইতোমধ্যে গুছিয়ে এনেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও শুরু থেকেই তার নির্বাচনী শিবিরের সাথে রাশিয়ার কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করে আসছেন। এ সংক্রান্ত তদন্তকে ধারাবাহিকভাবে ‘উইচ হান্ট’অ্যাখ্যা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

৬৯ বছর বয়সী ম্যানাফোর্ট ছিলেন ট্রাম্পের কাছের মানুষদের একজন। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের মধ্যেই নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে ইউক্রেনের রাশিয়াপন্থিদের কাছ থেকে ম্যানাফোর্টের কয়েক মিলিয়ন ডলার নেয়ার তথ্য আসে।

ফলে নির্বাচনের মাত্র আড়াই মাস আগে ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বাধ্য হন প্রবীণ এই রিপাবলিকান নেতা। নির্বাচনের পর তদন্ত শুরু হলে ২০১৮ সালের জুনে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার রায়ের দিন ম্যানাফোর্ট আদালতে হাজির হন কারাগারের সবুজ জাম্পস্যুট পরে, হুইল চেয়ারে করে।

আদালতে তিনি বলেন, গত দুই বছর ছিল তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়। মামলার কারণে তিনি অপমানিত ও লজ্জিত হয়েছেন। পেশাগত ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

মামলার শুনানিতে ম্যানাফোর্ট শাস্তি না দেয়ার আর্জি জানালেও অপরাধের জন্য কোনো অনুতাপ প্রকাশ করেননি, যা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারক।

তবে কর ফাঁকি ও জালিয়াতির জন্য ম্যানাফোর্টের ১৯ থেকে ২৪ বছরের সাজার যে আর্জি প্রসিকিউটররা জানিয়েছিলেন, তা ‘অনেক বেশি’ বলে মনে হয়েছে বিচারকের কাছে।

রায়ে তিনি বলেছেন, এ আদালত কেবল ম্যানাফোর্টের জালিয়াতিও কর ফাঁকির অভিযোগেরই বিচার করেছে। নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগের সাথে এ মামলার কোনো সম্পর্ক নেই।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top