সামনেই ভারতের লোকসভা নির্বাচন। প্রতিবারের মতোই প্রধান দুই প্রতিপক্ষ বিজেপি ও কংগ্রেস। দুই দলের মধ্যে চলছে নিজেদের অপরিহার্যতা ও ভালো প্রমাণ এবং বিরোধীপক্ষকে ঘায়েল করার প্রচেষ্টা। একপক্ষে আছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে আছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি।
এ পর্যন্ত বিজেপিবিরোধী মহাজোটকে একাধিকবার কটাক্ষ করেছেন নরেন্দ্র মোদি। পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরে এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বিরোধীদের পাকিস্তানের পোস্টার বয় পর্যন্ত বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। আর এবার তার কথা তাকেই ফিরিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি বললেন আমরা নই তিনিই পাকিস্তানের পোস্টার বয়।
এর কারণ হিসেবে রাহুল বলেন, পাঠানকোটের বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে আক্রমণের পর প্রধানমন্ত্রী আইএসআইকে এ দেশে এসে তদন্ত করার অনুমতি দেন। শুধু তাই নয় মোদি নিজের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নওয়াজ শরিফ (পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী)-কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তাই বোঝাই যাচ্ছে আমরা নই প্রধানমন্ত্রী নিজে পাকিস্তানের পোস্টার বয়।
কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার পর পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরে অভিযান চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী। কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করে ওই অভিযানে বহু সশস্ত্র ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তান শুরু থেকেই এ অভিযানের সত্যতা স্বীকার করলেও তাদের হামলা বা তাদের হামলার কারণে কারো হতাহতের দাবি প্রত্যাখ্যান করে। দুই দেশের এই উত্তেজনাকর মুহূর্তে প্রাথমিকভাবে ভারতের রাজনৈতিক সব দল সরকারের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলালেও উত্তেজনা ঝিমিয়ে আসতেই বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, স্ট্রাইক যে হয়েছে তার প্রমাণ দিক মোদি প্রশাসন।
মোদি সরকার তাদের দাবি প্রমাণের কোনো চেষ্টা না করলেও এটাকে হাতিয়ার করেই মোদি একাধিক বার দাবি করেছেন বিরোধীরা পাকিস্তানের সুরে সুর মেলাচ্ছেন। বিরোধীদের এসব বক্তব্যে লাভ হচ্ছে পাকিস্তানের। মোদির এ বক্তব্যকেই বৃহস্পতিবার খারিজ করে দেন কংগ্রেস সভাপতি।
এর আগে বিরোধী শিবিরকে একযোগে আক্রমণ করে বুধবার মোদি বলেন, ভারতীয় বিমানবাহিনীর আঘাতে দেশের মধ্যেও কারো কারো চোট লেগেছে। যারা মহাজোট করেছেন তাদের আচরণ পাকিস্তানের পোস্টার বয়ের মতো। তারা দেশের মানুষকে ভুলপথে পরিচালিত করছে, আমাদের সেনাবাহিনীকেও অপমান করেছে।
স্ট্রাইক প্রসঙ্গে নীরবতা ভঙ্গ করেছেন জনা কয়েক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তার মধ্যে আছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং ও ভি কে সিং। নির্মলা বলেন, পররাষ্ট্র সচিব ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেটাই ভারতের বক্তব্য।
পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলেও আসলে ওই হামলায় হতাহতদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করেননি। শুধু বলেছেন, হতাহতের সংখ্যা অনেক। অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও আক্রমণ করেছেন বিরোধীদের। তিনি বলেছেন, সরকারি সংস্থার রিপোর্ট বলছে জয়েশ-ই মোহাম্মদের ঘাঁটিতে তিনশটিরও বেশি মোবাইল চালু ছিল। সেগুলি কি তাহলে গাছেরা ব্যবহার করত? এর আগে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেছিলেন, বিমানবাহিনীর অভিযানে আড়াই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। তার আগে সরকার পক্ষের কেউ সংখ্যা নির্দিষ্ট করেননি।
সূত্র : এনডি টিভি, ইন্ডিয়ান টুডে