ভারতে আবারো নির্যাতনের শিকার হলেন কাশ্মিরের নাগরিকরা। ভারতের অন্যতম শহর লক্ষ্ণৌর রাস্তায় তাদের উপর আক্রমণ করে উগ্র হিন্দুবাদী সংগঠনের কয়েকজন সদস্য। তাদেরই একজন মারধরের ভিডিও শেয়ার করেছে। গোটা ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইছে বিশ্ব জুড়ে।
মধ্য লক্ষ্ণৌর দালিগঞ্জ এলাকায় বুধবার বিকেল পাঁচটায় ঘটনাটি ঘটেছে। কাশ্মিরের ওই দুই বাসিন্দা দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্ণৌতে আছেন। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাতে পাওয়া ওই ভিডিওটিতে দেখা যায়, রাস্তায় তাদের উপর আক্রমণ করে উগ্র হিন্দুবাদী সংগঠনের কয়েকজন সদস্য। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে গোটা ঘটনাটি ধরা পড়েছে। সেখানে একজনকে বলতে শোনা যাচ্ছে ওই দুই ব্যবসায়ীকে মারা হচ্ছে কারণ তারা কাশ্মীরের বাসিন্দা।
মারধরের ঘটনা দেখে স্থানীয়রা ওই দুই ব্যবসায়ীকে রক্ষা করতে আসেন। উগ্র হিন্দুদের রুখে দিয়ে ওই দুজনকে উদ্ধার করেন তারা। এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত একজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তবে এই ঘটনার মূল অভিযুক্তের খোঁজ নেই। সে নিজেকে বিশ্ব হিন্দু দল নামে একটি সংগঠনের সভাপতি হিসেবে তুলে ধরে।
যাতে উত্তেজনা ছড়াতে না পারে তার জন্য ভিডিওটিকে ফেসবুক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এটি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন কাশ্মীরিরা। এমতাবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় দশটি রাজ্যে থাকা কাশ্মীরিদের সুরক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রকে। কারণ তাদের উপরই আক্রমণ নেমে এসেছে বলে খবর।
কাশ্মিরে জঙ্গি হানার পর থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কাশ্মিরিদের উপর আক্রমণ হচ্ছে বলে এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কাশ্মীরিদের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে মামলা করেন আইনজীবী তারিক আবীদ। সেখানে হামলার ঘটনার পাশাপাশি কাশ্মিরিদের বয়কট করা নিয়ে মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায় যা বলেছেন সেটিও যুক্ত করা হয়েছে।
দেশটির প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেন, গণপিটুনি আটকাতে যে সমস্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের নোডাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল কাশ্মিরের বাসিন্দাদের উপর আক্রমণ ঠেকানোর দায়িত্বও তাদেরই হবে। শুধু মারধর নয় তাদের কোনও রকম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে কিনা বা সামাজিকভাবে বয়কট করা হচ্ছে কিনা তাও দেখা হবে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণায়কে নোডাল আফিসারদের নাম ও মোবাইল নম্বর বেশি সংখ্যায় মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
সূত্র : এনডিটিভি।