সিদ্ধান্ত পাল্টিয়েছেন মোকাব্বির, মনসুর অনড়

স্পিকারের কাছে চিঠি দিয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ার ব্যাপারে মোকাব্বির খান যে আগ্রহ প্রকাশ করে ছিলেন তা থেকে সরে এসেছেন। বুধবার ড. কামাল হোসেনের বাসায় এক বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেন মোকাব্বির। তবে শপথ নেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় আছেন সুলতান মো. মনসুর।

গণফোরাম থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত সুলতান মো. মনসুর বলেছেন, তিনি বৃহস্পতিবার শপথ নিতে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল আছেন।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে কামাল হোসেনের গণফোরামে নাম লিখিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে জয়ী হন সুলতান মনসুর। মোকাব্বির গণফোরামের দলীয় প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে সিলেট-২ আসন থেকে বিজয়ী হন। ওই আসনে ধানের শীর্ষের প্রার্থী না থাকায় বিএনপির সমর্থন পেয়েছিলেন তিনি।

ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জানায়, তাদের জোট থেকে বিজয়ী আটজন সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন না।

এর মধ্যেই সুলতান মনসুর ও মোকাব্বিরের চিঠি পেয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় দুজনের শপথ অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছে সংসদ সচিবালয়।

তার একদিন আগেই সিদ্ধান্ত বদলানোর কথা জানালেন গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাব্বির।

তিনি বুধবার বলেন, ‘আমি এলাকার জনগণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু আমার উপস্থিতিতে গণফোরামের দলীয় সিদ্ধান্ত হয়েছে- ৭ মার্চ শপথ না নেয়ার। এজন্য আমি তারিখ পাল্টিয়েছি।’

বৃহস্পতিবার শপথ না নিলেও ‘একেবারেই শপথ নেবেন না’ এমন কথা বলছেন না মোকাব্বির।

তিনি বলেন, ‘পরে সুযোগ সুবিধা অনুযায়ী দলীয় ফোরামে আলোচনা করে শপথের দিন-তারিখ ঠিক করব।’

দল থেকে বহিষ্কার কিংবা দলীয় চাপেই শপথের সিদ্ধান্ত পাল্টেছেন কি না- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আজকের দলীয় ফোরামের সভায় স্যার (ড. কামাল) ছিলেন; সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আমিও প্রেসিডিয়াম সদস্য।’

‘এখন দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা মেনে নিয়েছি। পরে দলকে বুঝিয়ে, আলোচনা করে শপথের বিষয়ে পরবর্তী তারিখ নেব। আমি এলাকার জনগণের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছি, তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’

সুলতান মনসুরের সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে মোকাব্বির জানান।

সুলতান মনসুর বলেন, ‘আমি বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় শপথ নেওয়ার জন্য সময় নিয়েছি; যথাসময়ে শপথ নেব।’

দলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই দলের বিষয়টি আমি জানি না; অন্য কারও বিষয়ও জানি না। আমি শপথ নেব।’ গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর তালিকায় সুলতান মনসুরের নাম থাকলেও তিনি তা অস্বীকার করে আছেন।

তিনি বলেন, তিনি জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য। আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে গণফোরাম গঠনকারী কামাল হোসেন কয়েক বছর আগে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া নামে একটি ফোরাম গড়ে তোলেন।

এবার নির্বাচনের আগে বিএনপির সাথে জোট বাঁধার সময় গণফোরাম, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া দুটোই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়।

ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মনসুর এক সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। জরুরি অবস্থার সময় সংস্কারপন্থি হিসেবে দলে অপাঙক্তেয় হয়ে পড়াপর পর তিনি কামাল হোসেনের সাথে ভেড়েন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top