নতুন ভূত হারকিউলিস

হঠাৎ করে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলায় হারকিউলিস নামে একটি চরিত্রের উদ্ভব হয়েছে। অভিযুক্ত ধর্ষকদের গুলি করে হত্যা করে গলায় ঝুলিয়ে দিচ্ছে সাদা কাগজ। সেই কাগজে বিচার বহির্ভূত এই হত্যার দায় নিচ্ছে হারকিউলিস। হারকিউলিস একজন পৌরণিক রোমান ‘বীর ও দেবতা’। তিনি শারীরিক শক্তি ও দুঃসাহসিক অভিযানের জন্য বিখ্যাত।

বীর শব্দটি ইতিবাচক অর্থে ব্যবহার হয়। কোনো নৈতিক অবস্থানের পক্ষে জীবন পণ করে যারা যুদ্ধে বিজয়ী হন তাদের সাধারণত বীর বলা হয়। এ উপাধি মানুষের জন্য। কিন্তু এ রোমান বীর আবার দেবতা! দেবতাকে বিশেষ ক্ষমতার জন্য বীর উপাধি দেয়া প্রকৃতপক্ষে মানুষের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। দেবতা যে অর্থে আরোপ করা হয় সেটা মূলত মানুষের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী ও মানুষের মদদদাতা এক মহাশক্তিকে বোঝায়। বাস্তবে কখনো তার দেখা মেলে না।

দুটো ধর্ষণ মামলায় সন্দেহভাজন তিনজন অভিযুক্ত বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। এর একটি ঘটনা পিরোজপুরের কথিত মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণ। ওই মামলার দুই বন্ধুকে পৃথকভাবে ধরে হত্যা করা হয়েছে। তাদের দুইজনের গলায় চিরকুট সাঁটানো ছিল। সহযোগী একটি দৈনিক দুটো হত্যা নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়েছে। অনুসন্ধানের এমন তথ্য পাওয়া গেছে, যাতে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। ধর্ষণের সাথে সম্পর্ক নেই এমন দু’টি প্রাণ কেড়ে নেয়া হয়েছে কি না সে ব্যাপারে সন্দেহ আরো গভীর হয়েছে।

মাদরাসাছাত্রী ধর্ষণ মামলার আসামি ইশতিয়াক আহমেদ ওরফে সজল জমাদ্দারকে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড থেকে ২২ জানুয়ারি তুলে নেয়া হয়। তিনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। দুই দিন পর তার লাশটি পাওয়া যায় ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ার বেলতলা গ্রামে। ধরে নেয়ার স্থান থেকে এটি ২৪০ কিলোমিটার দূরে। লাশের গলায় ঝোলানো সাদা কাগজে নিজের একটি স্বীকারোক্তি, ‘আমি…রের ধরসক, ইহাই আমার পরিণতি।’ অন্যজন কাবিত ইসলাম ওরফে রাকিব মোল্লাকে সাভার থেকে ২৪ জানুয়ারি তুলে নেয়া হয়। এক সপ্তাহ পর তার লাশ পাওয়া যায় একই জেলা ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার আঙ্গারিয়া গ্রামে। সাভার থেকে ওই জায়গাটির দূরত্ব ২৬০ কিলোমিটার। গলায় ঝোলানো চিরকুটের শেষে হত্যাকারী হিসেবে লেখা ছিল ‘হারকিউলিস’।

এ ধরনের নাম ব্যবহারের উদ্দেশ্য অবৈধ কাজটিকে জনপ্রিয় করে তোলা। সেটা এক শ্রেণীর মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছেও। এখানে দুটো বিষয় তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত, এর মাধ্যমে বিদ্যমান বিচারব্যবস্থাকে অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হয়। দ্বিতীয়ত, আদৌ হত্যা করা কথিত ধর্ষকেরা এর জন্য দায়ী কি না, না ধর্ষণের নামে অন্য কোনো উদ্দেশ্যে তাদের হত্যা করানো হয়েছে। এ ধরনের জনপ্রিয় চরিত্রগুলো কথিত ভালো কাজে ব্যবহার করার অশুভ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

বিচারবহির্ভূত হত্যা কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাংলাদেশে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রধানত অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা সন্ত্রাসী ও খুনিদের বিরুদ্ধে এমন তাৎক্ষণিক অ্যাকশন দেখলে সাধারণ মানুষ খুশি হয়। এখন নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ করে অনেকে পার পেয়ে যাচ্ছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে হারকিউলিসের আবির্ভাব ঘটছে। তারাও সাধারণ মানুষের কাছে হিরো বনতে চাচ্ছেন। তবে এর একটা ক্ষেত্র তৈরি রয়েছে বাংলাদেশে। নারীদের ওপর পুরুষদের করা সন্ত্রাস নিয়ে জাতিসঙ্ঘ ২০১৩ সালে কয়েকটি দেশে একটি জরিপ চালায়। বাংলাদেশও সেই জরিপের অন্তর্ভুক্ত ছিল। বাংলাদেশে বয়স্ক নারী ও বালিকাদের শতকরা যথাক্রমে ৯৫ ও ৮৮ শতাংশ ক্ষেত্রে ধর্ষণের জন্য আইনি কোনো প্রতিকার পায়নি। সম্প্রতি একটি পত্রিকার পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, আরো করুণ অবস্থা। ২০০২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে করা পাঁচ হাজার মামলার মধ্যে মাত্র ৩ শতাংশ মামলার সুরাহা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ কেন বিচারব্যবস্থার ওপর আস্থা হারাচ্ছে পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট জানা যাচ্ছে।

প্রচলিত বিচারব্যবস্থায় একটি কথা রয়েছে- একজন মানুষ ততক্ষণ পর্যন্ত নির্দোষ যতক্ষণ না প্রমাণিত হচ্ছে সে অপরাধটি করেছে। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি বিচারবহির্ভূত হত্যা মানে, একজন নির্দোষ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। এ ধরনের একটি হত্যাকে পুরো মানবতাকে হত্যার সাথেও তুলনা করা হয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা আসলে একটি চোরাগলি তৈরি করছে। পৌরাণিক চরিত্র হারকিউলিসের কর্ম বিবেচনা করে দেখা যায় অনেক অন্যায় সীমালঙ্ঘন তিনি করেছেন। এই জনপ্রিয় চরিত্র নিজেই তার স্ত্রী সন্তানকে হত্যা করেন। তবে বলা হচ্ছে সুস্থ জ্ঞানে তিনি এই কাজটি করেননি। তিনি হত্যা করেছিলেন নিজের শিক্ষককেও। আর যেসব দুঃসাহসিক কাজ তিনি করেছেন এগুলো সব সত্য ন্যায়ের পক্ষে ছিল না। তার পরেও এই চরিত্রটি শৌর্য-বীর্য্যরে প্রতীক হয়ে উঠেছিল কাব্য, গল্প, উপন্যাসে। পরবর্তীতে নাটক সিনেমায়। প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের কোনো চরিত্র পৃথিবীর ইতিহাসে এসেছিল কিনা, সেটা নিশ্চিত করে বলা যায় না।

এ ধরনের আরেকটি চরিত্র রবিনহুড। গরিবের বন্ধু হিসেবে পরিচিত হুডের প্রথম জীবনে জমিদারি ছিল। তৎকালীন সরকারি কর্তৃপক্ষ তাকে জমি থেকে বঞ্চিত করেন। এরপর তিনি ডাকাতে পরিণত হন। ধনীদের সম্পদ লুট করে তিনি দরিদ্রদের বিলিয়ে দিতেন। এ ধরনের আরেকটি চরিত্র তৈরি করেন বাংলাদেশের কথাসাহিত্যিক রোমেনা আফাজ। ছোটবেলায় এক নৌদুর্ঘটনায় চৌধুরী বাড়ির ছেলে মনির হারিয়ে যায়। পরে এক দস্যু সর্দার তাকে দস্যু বনহুররূপে গড়ে তোলেন। তিনি এক দস্যুর হাতে গড়ে উঠলেও সন্ত্রাস চোরাকারবারিদের কাছে যমদূতের মতো ছিলেন। একসময় এ সিরিজটি কিশোর ও তরুণদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল।

এ ধরনের চরিত্র কিশোর ও নব্য যুবকদের খুব আকর্ষণ করে। কাল্পনিক চরিত্রের অনুরূপ তারা নিজেদের গড়ে তুলতে চায়। কিন্তু এর বাস্তব কোনো ভিত্তি না থাকায় এই কাহিনীগুলো আদতে কোনো কাজে আসে না। গল্প উপন্যাসের রসালো উপস্থাপনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। কোনোটি জনপ্রিয় টেলিভিশন সিরিয়াল হিসেবে জায়গা করে নিচ্ছে। হচ্ছে এগুলোর ওপর ভিত্তি করে ছায়াছবি। প্রকৃতপক্ষে এই চরিত্রগুলোর দিকে যদি নির্মোহ দৃষ্টি ফেলা যায় তাহলে সারবস্তু কিছু পাওয়া যায় না। এগুলোর মধ্যে অসংখ্য বৈপরিত্য। তাই এই চরিত্রগুলো আদর্শ হতে পারে না। অনুসরণীয় হওয়ার প্রশ্নই আসে না।

হারকিউলিস রবিনহুড কিংবা দস্যু বনহুর আধুনিক মানুষের বিনোদনের উপাদান। স্রেফ মানুষকে আনন্দ দেয়ার জন্য মাত্রাতিরিক্ত হিরোইজম এদের ওপর চাপানো হয়েছে। রবিনহুড ও হারকিউলিস নামে টিভি সিরিয়ালে এমন অস্বাভাবিক ও অসম্ভব বিষয় চিত্রিত করে দেখানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বিনোদনের জন্য ‘মিথ্যা ভালো’ তৈরি করা হচ্ছে। কিছু চরিত্রকে বানানো হয়েছে পণ্য। সত্য মিথ্যার মিশ্রণ করে আজগুবি অদ্ভুত ককটেল বানানো হয়েছে। এর একটি প্রভাব পড়ছে জনসমাজে। সাধারণ মানুষের মনে এই চরিত্রগুলোর প্রতি ভালো লাগা তৈরি হয়ে গেছে। আর অন্যায়কারীরা মানুষের এমন অনুভূতিকে আঘাত করে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে।

পিরোজপুরে মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের মামলা করা হয় ১৭ জানুয়ারি। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১২ জানুয়ারি ওই ছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। ইতোমধ্যে মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। পিরোজপুর সদর হাসপাতালে দুই নারী চিকিৎসক তা করেছেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক সময়ে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’ এ ব্যাপারে সহযোগী দৈনিক পত্রিকাটিকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালের দুই নারী চিকিৎসকের একজন জান্নাতুল মাওয়া বলেন, ‘ধর্ষণ হলে অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক কোনো না কোনো ইনজুরি পাওয়া যাওয়ার কথা। সেগুলোই আমরা দেখি। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় আমরা যা পেয়েছি, তা-ই আদালতের কাছে দিয়েছি।’

ছাত্রীর বাবা পত্রিকাটিকে বলেন, ধর্ষণের ঘটনার কয়েক দিন পর মামলা হয়েছে। এতদিন পর ধর্ষণের আলামত পাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি। ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটার পর মামলাটি করতে পাঁচ দিন দেরি করা হলো কেন, এ ব্যাপারে মেয়েটির বাবাকে প্রশ্ন রাখা হয়নি। ধর্ষণের অভিযোগে হত্যার শিকার হওয়া এ দুইজনের পরিচয় এবং তাদের ধরার যে ফিল্মি স্টাইল তাতে ঘটনাটি ব্যাপক অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। ইশতিয়াক একটি মোবাইল কোম্পানিতে চাকরি করতেন। বিয়ে করেছেন এক বছরও হয়নি। আগামী এপ্রিলে বউ তুলে আনার কথা। আর কাবিত ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র। কাবিতের নানাবাড়ি আর ওই ছাত্রীর বাড়ি একই সীমানায়। ইশতিয়াকের বাড়ি মেয়েটির পাশের বাড়িতে। হত্যার শিকার হওয়া দুইজনের বাবা জানিয়েছেন, কাবিতের মামার সাথে ওই ছাত্রীর বাবার জমিসংক্রান্ত বিরোধ ছিল।

পত্রিকাটি দুইজনের হত্যার ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান চালায়। এতে দেখা যায়, দুইজনকে ধরার জন্য মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয়েছে। যারা তাদের ধরতে চাইছিলেন, তারা সরকারি স্থাপনার সুবিধা নিয়েছেন। মোবাইল নেটওয়ার্ক ট্রেস করার প্রযুক্তি তারা ব্যবহার করেছেন। আটকের আগে ইশতিয়াক ও কাবিতের মোবাইলে এসএমএস এসেছে। এই খুদেবার্তা অনবরত পাঠানোর মাধ্যমে মোবাইল মালিকের অবস্থান শনাক্ত করা যায়। পত্রিকাটির পক্ষ থেকে পুলিশ সদর দফতরের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তার সাথে কথা হয়। এভাবে কারও অবস্থান শনাক্ত করার সামর্থ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া আর কারো আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, সরকারের নির্দিষ্ট সংস্থা থেকে এটা করা হয়। সেখান থেকে সাহায্য নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এটা ব্যবহার করে। তাহলে স্পষ্ট বোঝা গেল এমন প্রযুক্তি ব্যবহারের সামর্থ্য সাধারণ মানুষের নেই।

কাবিতের বন্ধু থেকে জানা যায়, ২৫ জানুয়ারি তিনি ও কাবিত সাভারে একটি দোকানে চা পান করছিলেন। এ সময় দুটো মাইক্রোবাস এসে দাঁড়ায়। সামনের গাড়ি থেকে চারজন নেমে তাদের দুইজনকে আটক করেন। এরপর তাদের পেছনের গাড়ির পাশে নিয়ে গিয়ে একজন জানতে চান ‘এ, না ও?’। গাড়ির ভেতর থেকে একজন কাবিতকে দেখিয়ে দেন। তখন কাবিতকে নিয়ে গাড়ি দু’টি চলে যায়।

গাড়ির সন্ধানে গিয়ে পত্রিকাটির প্রতিবেদক জানতে পারেন ইশতিয়াককে যে গাড়িতে তুলে নেয়া হয় সে গাড়ি শনাক্ত করা গেছে। সাদা রঙের ওই গাড়ি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী একটি বাহিনীর সদর দফতরের নামে নিবন্ধিত। উভয় ঘটনায় যারা তুলে নিয়ে গিয়েছিল নিজেদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছেন। অবশ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কোনো বাহিনী পরে এ দুইজনকে তুলে নেয়ার কথা স্বীকার করেনি। বিচারবহির্ভূত হত্যা সংঘটন ও মানুষ হাওয়া হয়ে যাওয়ার প্রায় প্রত্যেকটি ঘটনায় একই ধরনের বর্ণনা পাওয়া যায়।

বাংলাদেশে বিচারব্যবস্থার আরেকটি প্রহসন হচ্ছে সালিশি ব্যবস্থা। বিশেষত গ্রামাঞ্চলে এ ধরনের সালিশিতে নারীদের ওপর অবর্ণনীয় নিপীড়ন ও লাঞ্ছনা নেমে আসে। বিয়েবহির্ভূত যৌনতার জন্য এককভাবে তাদের দায়ী করা হয়। এ ক্ষেত্রে অসাধু সমাজপতিরা ধর্মের দোহাই দিয়ে থাকে। বাস্তবে কোনো ধর্ম এমন একপাক্ষিক একচোখা বিচারের অনুমতি দিয়েছে বলে জানা যায় না। ইসলাম মূলত এ ধরনের অপরাধীদের জন্য সাক্ষী উপস্থাপনের ওপর জোর দিয়েছে। এতে করে ঘটনাটি নিশ্চিতভাবে ঘটেছে সেটা প্রমাণিত হতে হবে। গ্রাম্যসালিশিতে নারীদের ঘায়েল করার জন্যও এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়। হারকিউলিস চরিত্র আবিভূত হওয়ার জন্য বিচারব্যবস্থার এমন দুর্বলতাও দায়ী।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিশেষত রাজনৈতিক নেতাকর্মী হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এমন কিছু অভিযোগও এসেছে যেখানে সরকারি দলের লোকেরাই হত্যার শিকার হয়েছেন। এই ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ নিজ দলের লোকেরা এমন হত্যাকাণ্ড সম্ভব করে তুলছে কি না, সেই বিষয়ে তদন্ত হয়নি। বিচারবহির্ভূত হত্যা ব্যাপকভাবে দেখা যায় মাদকবিরোধী অভিযানে। শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে দ্রুত বিচার পাওয়ার জন্য হারকিউলিস সেজে যাচ্ছেন বিচারবহির্ভূত হত্যার কর্তারা। এখন সন্দেহ হচ্ছে বিচারবহির্ভূত হত্যা প্রতিপক্ষ ঘায়েল করার অস্ত্র হিসেবে না, ব্যবহার হতে শুরু করেছে।
jjshim146@yahoo.com

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top