নির্বাচনকে সামনে রেখে ভারতে দলগুলোর মধ্যে এখন চলছে তীব্র বাকবিত-া। এর মধ্যে কাশ্মির, পুলওয়ামা বা পাকিস্তান ইস্যু নিয়ে বিষয়গুলো আরো অনেক বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেছে। এরই মাঝে মোদিকে দেশের জন্য লজ্জা বলে আখ্যা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
কয়েক মাস আগেই ভারতের আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশটিতে বড় ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টির আভাস দেয়া হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে। তবে সেক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ তথা সাম্প্রদায়িক হামলা-পাল্টা হামলার কথা বলা হয়েছিল।
কিন্তু কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার জেরে তার চেয়ে বড় ইস্যু পেয়ে যায় শাসক দল বিজেপি। দলটি এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে যেমন দায়ী করে, তেমনি অভ্যন্তরীণভাবে বিরোধীদলগুলোকে তাদের সাথে থাকার জন্য দায়ী করতে থাকে।
কিন্তু ভারতের সরকারের বাইরে থাকা দলগুলো মোদির এ আপত্তিতে কোনো ভ্রূক্ষেপই করেনি। বরং তারা এক্ষেত্রে মোদির বিপরীতে যে অবস্থান নিয়েছে তা স্পষ্টভাষায় প্রকাশ করে।
এরই ধারাবাহিকতায় কাশ্মিরে আত্মঘাতী হামলা প্রসঙ্গে আবারো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খোঁচা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। মঙ্গলবার এক সমাবেশে স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানান, তিনি জওয়ানদের পাশে রয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নেই।
বরং তিনি অভিযোগ করেন, মোদি ও তার দল বিজেপি জওয়ানদের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষে। আমরা শান্তির পক্ষে। কিন্তু আমরা মোদি আর বিজেপির বিপক্ষে। মোদি দেশের জন্য লজ্জা।
মমতা আরো বলেন, কয়েকটি জাতীয় নিউজ চ্যানেল মোদির আচরণকে সমর্থন করছে। আমার মনে হয় তারাও পরিস্থিতির শিকার। গত মঙ্গলবার দেয়া ভাষণে তিনি এ-ও বলেন, দেশের মানুষ সত্য ঘটনা জানতে পারছেন না। এটা খুবই দুঃখের।
সত্যকে সাধারণ মানুষের থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে। আমি মানুষের কথা বলবই। তাতে কেউ আমায় শাস্তি দিলেও আমার কিছু যায় আসে না। মানুষের জন্য কথা বলার অধিকার আছে, আর আমি সেটাই করে যাব।
পুলওয়ামার হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শহিদ জাওয়ানদের মৃত্যুকে কাজে লাগিয়ে কাউকে নির্বাচনে নির্বাচনে জিততে দেয়া হবে না। সেনাদের আত্মহত্যা দেশের জন্য। সেনাবাহিনী রাজনীতিতে আগ্রহ দেখায় না। যারা ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে আমি তাদের আচরণের প্রতিবাদ করছি।
মমতা এর আগেও আত্মঘাতী ওই হামলার সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের মুখে এ ধরনের হামলা হল কেন সেই প্রশ্নই তুলেছিলেন তিনি।
অন্যদিকে এরই মধ্যে তৃণমূলের তরফেও আক্রমণ শানানো হয়েছে। কয়েক দিন আগে তৃণমূল বিধায়ক এবং দলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ ব্রায়েন বলেন, ‘আমরা সবাই সশস্ত্র বাহিনীকে বিশ্বাস করি। তাদের কথা হলে আমাদের গর্বও হয়। কিন্তু ‘জুমলাজুড়ি’কে আমরা বিশ্বাস করি না।
আপনারা কি আগাম পরিকল্পনা না করেই সেনা জওয়ানদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। নাকি নির্বাচনে জেতাটাই আপনাদের একমাত্র লক্ষ্য। সেই কারণেই কি আপনি কাশ্মিরের হামলায় মৃত জওয়ানদের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে বক্তব্য পেশ করেন?
ধারণা করা হচ্ছে, এখানে জুমলাজুড়ি বলতে তিনি মোদি ও অমিত শাহর কথাই বুঝিয়েছেন।