ঢাকায় নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এস্টাপ পিটারসেন বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য পোশাক শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লাখ লাখ শ্রমিক এই শিল্পে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বর্তমানে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের কর্মপরিবেশ বিশ্বের যে কোনো দেশের জন্য অনুকরণীয়।
পোশাক রফতানিতে এই দেশ বিশ্বে দ্বিতীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই খাতে ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় টেকসই উন্নয়নের বিকল্প নেই। একইসাথে পোশাক শিল্পে সামাজিক দায়বদ্ধতা ইস্যুগুলোতে আরো বেশি মনযোগী হওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন উইনি এস্টাপ পিটারসেন।
সোমবার ‘বিশ্বব্যাপী পোশাক শিল্পের টেকসই স্থায়িত্ব’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এই বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে ১৫০ জন আন্তর্জাতিক ও জাতীয় গবেষক তাদের গবেষণা উপস্থাপন করবেন।
আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এ. এম. এম. সফিউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্যে পোশাক রফতানিকারদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাসির, অ্যালবর্গ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক পিটার হেসেল, আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান কাজী মো: রফিকুল আলম, প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. শরীফুল আলম, স্কুল অব বিজনেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: আমানুল্লাহ, টেক্সটাইল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. লাল মোহন বড়াল।
ডেনমার্ক ও বাংলাদেশের দীর্ঘ সহযোগিতার সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে ড্যানিশ রাষ্ট্রদূত উইনি এস্টাপ পিটারসেন বলেন, ডেভলপমেন্ট এজেন্সি-ড্যানিডার অনুদানে ‘পোশাক শিল্পে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার উন্নয়নের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক গবেষণা যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে ডেনমার্কের অ্যালবর্গ ইউনিভার্সিটি এবং বাংলাদেশের আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। সম্ভাবনাময় পোশাক শিল্প নিয়ে এতো বড় গবেষণা কার্যক্রম এই প্রথম।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাসির বলেন, বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশের পোশাক কারখানায় নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে ব্যাপক কর্মকাণ্ড গ্রহণ করা হয়েছে। এতে করে বর্তমানে পোশাক শিল্পে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত সম্ভব হয়েছে। সামাজিক সংলাপ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা বিষয়ে কাজ হচ্ছে।
অ্যালবর্গ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক পিটার হেসেল বলেন, কর্মপরিবেশের উন্নয়নের পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করাই এই গবেষণা কর্মের মুখ্য উদ্দেশ্য। এর মাধ্যমে বিশ্বের তীব্র প্রতিযোগী বাজারে পোশাক শিল্পের ক্রমবর্ধমান বিকাশ অব্যাহত রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে গবেষণা কার্যে সম্পৃক্ত ১২টি পোশাক কারখানাকে সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট তুলে দেন ড্যানিশ রাষ্ট্রদূত উইনি এস্টাপ পিটারসেন। এগুলো হচ্ছে মাস ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, আমান টেক্স, নর্দান ফ্যাশন, মাওনা ফ্যাশন, ইস্টওয়েস্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, পিমকি অ্যাপারেলস, জিএমএস কম্প্রোজিট নিটিং ইন্ডাস্ট্রি, ডেকো রেডিওয়্যার, ফ্যাশন স্টেপ, ক্যাপিটাল ফ্যাশন, আলেমা টেক্সটাইল, এনার্জিপ্যাক ফ্যাশনস।