ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসু ও হল সংসদ নিবার্চনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণার দ্বিতীয় দিনে ক্যাম্পাসে উৎসব মুখর পরিবেশে প্রচার প্রচারণা ও মিছিল করছে নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারীরা।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেভাবে প্রার্থীরা প্রচারের সুযোগ পাচ্ছেন হলগুলোতে সেভাবে তারা সুযোগ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করছেন।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মনোনীত পরিষদের এজিএস প্রার্থী আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্রচার প্রচারণার ক্ষেত্রে তারা যেভাবে মুভ করতে পারছেন সেভাবে হলগুলোতে পারছেন না। লিফলেট বিতরণ ও গ্রুপভিত্তিক প্রচারণা হলে করতে গেলেই বিভিন্নভাবে বাধা আসছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের সাথে আছে জানিয়ে অনিক বলেন, ফেয়ার নির্বাচন হলে তারা অবশ্যই জয়ী হবেন।
বাধা দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমর্থিত প্যানেলের সহ-সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন জানান, আমরা সাধারন শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করছি। তাদের চাওয়া পাওয়া যতটুকু সম্ভব সমাধানের চেষ্টা করছি।
ক্যাম্পাসে প্রচার প্রচারণার কাজে প্রতিটি প্যানেলের প্রার্থীরা বিনা বাধায় কাজ করছে। তিনি জানান, ছাত্রলীগ ছাড়া ছাত্রদল, প্রগতিশীল পুরো প্যানেলে লোক দিতে পারেনি। কারণ তাদের সে কর্মী নেই।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, হাতে হাতে লিফলেট বিতরণ করতে ছোট ছোট দলে মিছিলে মিছিলে ক্যাম্পাস দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রার্থীরা। হাকিম চত্বর, টিএসসি, বিজনেস ফ্যাকাল্টি, অপরাজেয় বাংলা ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থগার জুড়ে সবদিকে নিবাচনী আমেজ। আর মধুর কেন্টিন যেন রীতিমতো মিলনমেলা। পাশাপাশি বসে বিভিন্ন প্যানেলের প্রাথীর্রা আলোচনা করছে। আর বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিচ্ছেন তাদের কর্মীদের।
হাকিম চত্ত্বরে সিয়াম মোরশেদ পরিষদ মনোনিত প্রার্থীদের লিফলেট বিতরণ করছিলেন সানাউল্লাহ। তার কাছে জানতে চাইলে সে জানায়, ডাকসু বহুদিনের প্রতিক্ষিত একটি নির্বাচন। এখানে কে হারলো কে জিতলো তা বড় কথা নয় বরং দীর্ঘদিন পর যে একটি অবস্থার পরিবর্তন আসছে সেটাই বড় কথা। আশা করছি শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের প্রার্থীকেই বেছে নিবেন।
জানা যায়, ডাকসু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জাহাঙ্গীর কবির নানককে প্রধান করে ১১ সদস্যের একটি কমিটি করেছে। আওয়ামী লীগ চায়না ডাকসু তাদের হাতছাড়া হোক। আর বিএনপিও চেষ্টা করছে তাদের শেষ সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্র সংসদ নিবার্চনে ২৫ পদের বিপরীতে মনোনীত হয়েছে ২২৯ প্রার্থী। তাদের মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ২১জন। সাধারণ সম্পাদক(জিএস) পদে ১৪ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক( এজিএস)পদে ১৩ জন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদে ৯জন, কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ৯ জন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১জন, সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক পদে ৮জন, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে ১২ জন, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১জন, ছাত্র পরিবহন বিষয়ক সম্পাদক পদে ১০জন, সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক পদে ১৪ জন এবং ১৩ জন সদস্য পদের বিপরীতে ৮৬ প্রাথর্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
দেখা যায়, ডাকসু নির্বাচনে একমাত্র ছাত্রলীগই পরিপূর্ণ প্যানেলে লোক দিতে পেরেছে। ছাত্রদল ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল, কুয়েত মৈত্রী হল, রোকেয়া হল, সুফিয়া কামাল হল ও জগন্নাথ হলে কোন প্রার্থী দিতে পারেনি। এছাড়া প্রগতিশীল বামজোটও ২৩৪ বিপরীতে প্রার্থী দিতে পেরেছে মাত্র ১১২ জনের।
কারণ হিসেবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী জানান, নির্বাচিত না হলে পরে হল থেকে বের করে দেয়া ও না সমস্যার কারণে ছাত্রদলের প্যানেল থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী নয়। তবে সাথারণ শিক্ষার্থীদের প্রায় প্রত্যেকে চাচ্ছেন ছাত্রদের অধিকার আদায়ের পক্ষের শক্তি ডাকসুর ক্ষমতায় আসুক।