এ বছরের হজ নিবন্ধনে খুবই ধীরগতি চলছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন শুরু হওয়ার পর গত ১৯ দিনে মাত্র অর্ধেক কোটা পূরণ হয়েছে। এ কারণে আবারো সময় বাড়াতে বাধ্য হয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ নিবন্ধন চলছে আরো ধীরগতিতে। গত ১৬ দিনে মাত্র চার হাজার জন নিবন্ধন করেছেন। নির্দিষ্ট সময় আগামী ১০ মার্চ পূরণ হতে আর মাত্র ছয় দিন বাকি আছে। এ ছয় দিনে নিবন্ধন করতে হবে আরো প্রায় এক লাখ ১৬ হাজার ব্যক্তিকে। তবে সময়মতো কোটা পূরণ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকেরা।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনার হজ নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। সরকারি কোটার সাত হাজার ১৯৮ জন পূরণে আজ ৫ মার্চ পর্যন্ত প্রাক-নিবন্ধনের ২২ হাজার ৭৬৪ নম্বর ক্রমিক পর্যন্ত হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় মাত্র তিন হাজার ৯২৪ জন নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। ফলে এখনো তিন হাজার ২৭৪টি কোটা খালি রয়েছে। এ কারণে ধর্ম মন্ত্রণালয় নিবন্ধনের সময় আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। গতকাল এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেয়া হয়।
এ দিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি হজ নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনার মোট এক লাখ ২০ হাজার কোটা পূরণের লক্ষ্যে আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে প্রাক-নিবন্ধনের ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৮১৫ নম্বর ক্রমিক পর্যন্ত হজযাত্রীরা নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন। কিন্তু ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি ব্যবস্থাপনার চেয়েও ধীরগতিতে চলছে বেসরকারি হজযাত্রী নিবন্ধন। গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত মাত্র চার হাজার ৪৪ জন নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। ফলে আর মাত্র ছয় দিনে নিবন্ধন করতে হবে এক লাখ ১৫ হাজার ৯৫৬ জনকে। অর্থাৎ প্রতিদিন নিবন্ধন করতে হবে ১৯ হাজার ৩২৬ জনকে; যা প্রায় অসম্ভব। এ দিকে সরকারি ব্যবস্থাপনার মতো বেসরকারি ব্যবস্থাপনাতে এখনো সময় বাড়ানোর ঘোষণা দেয়নি মন্ত্রণালয়। তবে সময় বাড়তে পারে বলে বিভিন্ন সময় ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে প্রাক-নিবন্ধনের ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৮১৫ নম্বর ক্রমিকের মধ্যে থাকা হজযাত্রীরা আর সুযোগ পাবেন না। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট ক্রমিকের মধ্যে থাকা প্রাক-নিবন্ধিতরা যথাসময়ে হজ নিবন্ধন সম্পন্ন না করলে তারা এ বছর হজ পালনে আগ্রহী নন মর্মে বিবেচনা করে পরবর্তী ক্রমিকের প্রাক-নিবন্ধিত ব্যক্তিদের নিবন্ধনের জন্য আহ্বান জানানো হবে।
এ ব্যাপারে বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হাবের মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তসলিম নয়া দিগন্তকে বলেন, প্রতি বছর প্রথম দিকে কিছুটা গতি কম থাকে। নিবন্ধনের ঘোষণার পর হজযাত্রীদের টাকা সংগ্রহ করতে কিছুটা সময় লাগে। এরপর শেষ দিকে গতি অনেক বেড়ে যায়। আশা করি সময়মতো হজযাত্রীরা নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন।
চাঁদ দেখাসাপেক্ষে এ বছরের ১০ আগস্ট সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে সর্বমোট এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাত হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ২০ হাজার জন হজ পালন করবেন। এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১ এ চার লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা এবং প্যাকেজ-২ তে তিন লাখ ৪৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সর্বনি¤œ প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে তিন লাখ ৪৫ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করেছে।