মোদী না ইমরান! কে জিতলেন লড়াইয়ে ?

সাম্প্রতিক সময়ে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে কার জয় হলো, সে উত্তর খুঁজছেন দুই দেশের মানুষ। কিন্তু কী বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা?

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে পরিস্থিতি আপাতত কিছুটা শান্ত। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে এই দুই দেশের মধ্যে যে অশান্তি দেখা যাচ্ছিল, তাতে অনেকেই দেখছিলেন আসন্ন যুদ্ধের ছায়া। শুধু তাই নয়, দুই দেশের নাগরিক ও সংবাদমাধ্যমেও দেখানো হয় যুদ্ধের পক্ষে যুক্তি।

কিন্তু বর্তমানে সেসব আলোচনা থেমে ভারত ও পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ আলোচনায় নজর কাড়ছেন ইমরান খান ও নরেন্দ্র মোদী।

শান্তির বার্তা হিসেবে ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বার্তামানকে ছেড়ে দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ইতোমধ্যে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানে ইমরান খানকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার জোর দাবি উঠেছে। এই দাবির পক্ষে সই করেছেন চার লাখেরও বেশি মানুষ।

অন্যদিকে, ভারতের আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি ও সামরিক ক্ষমতাকে ভয় পেয়েই নাকি পাইলটকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন ইমরান খান। এমনই যুক্তি তুলে ধরছেন ভারতে মোদীর সপক্ষে থাকা মানুষেরা।

কিন্তু দুই দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বর্তমান ভারত-পাকিস্তান সমীকরণকে কিছুটা অন্যভাবে দেখছেন।

উগ্র জাতীয়তাবাদ বনাম সন্ত্রাসবাদ: কার পক্ষে বেশি যুক্তি?
ইমরান খানের বিরোধী হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক গুল বুখারি একটি টুইটে পাকিস্তানের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন।

বিশ্লেষক মোশারফ জায়দি’র মতে, ‘‘বিশ্বের কাছে মোদী একজন যুদ্ধপ্রেমী নেতা, কিন্তু বর্তমানে ইমরান একজন প্রকৃত রাষ্ট্রনায়ক।”

প্রশংসার সাথে সাথে জায়দি প্রশ্ন করেন ইমরানের অভ্যন্তরীণ নীতিকে। তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তানের যুদ্ধ ছাড়াও আরো সমস্যা রয়েছে, যেমন শিক্ষা, পানি ইত্যাদি। সেগুলোর দায়িত্বও তার কাঁধেই। ভুলে গেলে চলবে না।”

এদিকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে ইমরান খানকে ভারতীয় পাইলটকে ছেড়ে দেবার জন্য বাহবা দিলেও দেশের ভেতর গড়ে ওঠা বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছেন।

অন্যদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা একমত, মোদীর ভাগ্যে নেই কোনো নোবেল পুরস্কারে মনোনয়নের গুজবও।

পাকিস্তানের পাইলট ফিরিয়ে দেওয়াকে অনেকেই ভারতের জয় হিসেবে দেখলেও জৈশ-ই-মোহাম্মদের ঘাঁটিতে হামলার কোনো প্রত্যক্ষ প্রমাণ না পাওয়াকে অনেকে মোদীর নির্বাচনি চাল হিসেবে দেখছেন।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী যশবন্ত দেশমুখ জানান, সাম্প্রতিক এই সংঘর্ষের ফলে নরেন্দ্র মোদীর দল ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষে অন্তত আরো পাঁচ শতাংশ ভোট বাড়তে পারে।

বিশিষ্ট সাংবাদিক টি.কে অরুণ এক প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘‘পাকিস্তানকে একহাত নেবার এই চাল দেশে জাতীয়তাবাদের উত্তেজনা বাড়াবে। এই কাজে মোদী সফল।”

সূত্র : ডয়েচে ভেলে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top