সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলী হত্যা মামলার আসামি সাইফুল ইসলাম মামুনের মৃত্যুদণ্ড গতকাল রোববার রাত ১০টা ১ মিনিটে কার্যকর করা হয়েছে। কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার মো: শাহজাহান আহম্মেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ফাঁসি কার্যকর করার জন্য কারাগার এলাকায় নেয়া হয় পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা।
জানা গেছে, রাত সাড়ে ৮টায় কারাঅভ্যন্তরে প্রবেশ করেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তফা কামাল পাশা, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মশিউর রহমান, উপপুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) শরীফুর রহমান, সিভিল সার্জন সৈয়দ মঞ্জুরুল হক। পরে তাদের উপস্থিতিতে রাত ১০টা ১ মিনিটে সাইফুল ইসলাম মামুনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর কারাফটকে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন জেল সুপার মো: শাহজাহান আহম্মেদ। ফাঁসি কার্যকরের পরে রাতেই একটি অ্যাম্বুলেন্সে সাইফুল ইসলাম মামুনের লাশ কাশিমপুর কারাগার থেকে তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের খোন্তাকাটা গ্রামের উদ্দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের রায় হওয়ার পর ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সাইফুল ইসলাম মামুনকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
এর আগে রোববার বেলা পৌনে ২টায় সাইফুল ইসলাম মামুনের সাথে তার মা, ভাই, বোন, খালা ও খালাতো বোনসহ পরিবারের প্রায় ১০-১২ জন সদস্য শেষবারের মতো সাক্ষাৎ করেছেন। তারা প্রায় ঘণ্টা খানেক কথাবার্তা বলেন এবং প্রিয় খাবার খেতে দেন।
২০১২ সালের ৫ মার্চ ঢাকার গুলশানে কূটনৈতিক এলাকায় সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলীকে গুলি করা হয়। পরদিন ভোরে তিনি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে গুলশান থানায় মামলা করে। আদালত ওই মামলায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। পরে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম মামুনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন। এ ছাড়াও আদালত অপর তিনজনের মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন এবং একজনকে খালাস দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত সাইফুল ইসলাম মামুন বাগেরহাটের শরণখোলা থানার মধ্য খোন্তাকাটা এলাকার মৃত আবদুল মোতালেব হাওলাদারের ছেলে।