আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে ডোবাতে (পরাজিত করতে) কৌশলে ঘোড়া প্রতীকের পিছনে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বানকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের মাঝে এমন সমীকরণ হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান শামীম আহম্মেদ মুরাদ। নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পাওয়ার পরই নৌকাকে ডোবাতে (মুরাদকে পরাজিত করতে) স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের ছোট ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী মোজাম্মেল হোসেন রোকনোর ঘোড়া প্রতীকে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী দুই নেতাও চেয়ারম্যান পদে নৌকার বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হয়েছেন ঠিকই। তবে এখন পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় তাদের কোনো পোস্টার বা প্রচারণা চোখে পড়েনি বলে জানান অনেক ভোটার। এরইমধ্যে স্বতন্ত্র ওই দুই প্রার্থী আনুষ্ঠানিতভাবে প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করেই স্থানীয় এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের ছোট ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী মোজাম্মেল হোসেন রোকনের ঘোড়া প্রতীকের নির্বাচনী জনসভায় অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়াও উপজেলার ৯ জন ইউপি চেয়ারম্যানসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের বেশকিছু নেতাকর্মী নৌকা প্রতীক ডোবাতে ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করেই ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে মাঠে নামা স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম চৌধুরী (আনারস) ও সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ বিলকিস (মোটর সাইকেল)।
উপজেলার বিশিষ্টজন ও অনেক ভোটারের অভিমত, এখানকার আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীসহ জনপ্রতিনিধিরা স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের সান্নিধ্য পাওয়ার জন্যই তার ছোট ভাইয়ের নির্বাচনী প্রতীক ঘোড়ার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে এটি দলের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী বলেও তাঁরা মন্তব্য করেন।
উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১০ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শামীম আহম্মেদ মুরাদসহ (নৌকা) ৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম চৌধুরী (আনারস), সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ বিলকিস (মোটরসাইকেল) ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি স্থানীয় এমপি রতনের ছোট ভাই মোজাম্মেল হোসেন রোকন (ঘোড়া)।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম আহম্মেদ বিলকিস বলেন, নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার লক্ষ্যেই আমি আমার নির্বাচনী সকল কার্যক্রম স্থগিত রেখেছি। তবে নির্বাচনে কাকে সমর্থন জানাব সেটি পরে ভেবে দেখব।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শামীম আহম্মেদ মুরাদ বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার হাতে নৌকা তুলে দিয়েছেন। আর এলাকাবাসী আমার সাথে আছে। তাই কোনো ষড়যন্ত্রই নৌকার বিজয়কে আটকে রাখতে পারবে না। তবে আগামী ১০ মার্চ নির্বাচনে বিপুল ভোটে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করে তা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারব বলে আমি আশাবাদী।