আমাকে না এনে বলা হয়েছে, ইচ্ছা করে আসিনি : খালেদা জিয়া

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ২০ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির না হওয়া প্রসঙ্গে বলেছেন,আমি প্রস্তুত ছিলাম, আমাকে আদালতে আনা হয়নি। অথচ বলা হয়েছে, আমি ইচ্ছা করে আদালতে আসিনি। সেটা ঠিক না । রোববার নাইকো মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে প্রবেশ করেই তিনি বিচারককে উদ্দেশ্য করে এ কথা বললেন। বিএনপির ভেরিভাইড ফেসবুক থেকে খবরটি নেয়া হয়েছে।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি নাইকো দুর্নীতি মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির না করেই জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল— খালেদা জিয়া ঘুমাচ্ছেন। তিনি ঘুম থেকে উঠতে পারেননি বলে আদালতে হাজির করা হয়নি।

রোববার (৩ মার্চ) নাইকো মামলায় হাজিরা দিতে ১২টা ৩৪ মিনিটে আদালতে আনা হয় তাকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে । এজলাসে ছিলেন বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান। আদালতের কার্যক্রম শেষ হয় একটা ৪৮ মিনিটে। এরপর আবারও বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিন আদালতে বিএনপি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত ছিলেন।

আদালতে প্রবেশ পথে বেগম খালেদা জিয়াকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সালাম দিয়ে কেমন আছেন জানতে চান। সালামের উত্তর দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া জানান, শরীর ভালো যাচ্ছে না।

আদালতে মামলার আসামি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ আইনি পয়েন্টে তিনটি যুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, মামলায় আমার বিষয়ে কোনো কিছু নেই। নেই কোনো দলিল,সাক্ষী বা কোনো কাগজ। আমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থাকা কালে শুধু মতামত দিয়েছি, যা সব সরকারের আমলে দেয়া হয়। বেগম খালেদা জিয়াও নিয়ম অনুযায়ী স্বাক্ষর দিয়েছেন। আগের প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানী সচিবও এ কাজ করেছেন যা চার্জশিট দেখে প্রতীয়মান হয়। তাই বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল আসামির অব্যাহতি চাচ্ছি।

বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার আদালতকে বলেন, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার বিষয়ে একটি আবেদন করেছি। আদালত এ বিষয় কোনো আদেশ এখনো দেয়নি। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম খালেদা জিয়াকে দেখেন। তারপরের দিন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার প্রয়োজন মর্মে একটি প্রতিবেদন দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি গ্যাটকো মামলায় হাজিরা দেয়ার জন্য কারাগার থেকে আলিয়া মাদরাসা মাঠ আদালতে গাড়িতে করে খালেদা জিয়াকে নেয়া হয়। গাড়ি থেকে নামার সময় খালেদা জিয়া পড়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ধরেন। এরপর হুইল চেয়ারে করে আদালতে নেয়া হয় তাকে। তাই সব মিলে খালেদার চিকিৎসা প্রয়োজন। আগে চিকিৎসা পরে বিচার।

তিনি আরও বলেন, মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আমরা প্রয়োজনীয় কাগজ পাইনি। প্রয়োজনীয় কাগজ পেলে শুনানি করতে পারবো।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ১৯ মার্চ দিন ধার্য করেন। আর খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে আজ আদেশ দেবেন বলে জানান।

শুনানি শেষে রোববার বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে অভিযোগ করেছেন, নাইকো দুর্নীতি মামলায় গত তারিখে আদালতকে বিভ্রান্ত করেছে জেল কর্তৃপক্ষ। আদালতকে জানানো হয়, তিনি ঘুম থেকে উঠতে পারেননি। তাই আদালতে আসেননি।বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, গত তারিখে তিনি রেডি হয়ে বসে ছিলেন। কেউ তাকে আনতে যায়নি।

এদিন আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৯ মার্চ দিন ঠিক করেন। মাসুদ আহমেদ তালুকদার আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ, তার চিকিৎসার দরকার- জানিয়ে আমরা আদালতে আবেদন করেছিলাম। এদিন বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে বিচারক বলেন, আদালত এ বিষয়ে পরে আদেশ দেবে।

মামলার আরেক আসামী মওদুদ আহমদ বলেন, তিনি এবং এই মামলার সব আসামি অব্যাহতির জন্য আবেদন জানাবেন ।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top