বড়াইগ্রাম উপজেলার মাঝগ্রাম এলাকার এক গৃহবধুকে চাকরীর প্রলোভনে আট দিন ধরে একটি রিসোর্টে আটকে রেখে গণধর্ষণ করেছে চার বখাটে। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে ওই গৃহবধুর ভগ্নিপতি। এর আগে গৃহবধুর কোন সন্ধান না পেয়ে তার স্বামী বখাটে মাসুদের নাম উল্লেখ করে বড়াইগ্রাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছিলেন।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকজন জানায়, গত ১৮ই ফেব্রুয়ারী বড়াইগ্রামের মাঝগ্রাম হাদিস মোড় এলাকার মালেক হোসেনের ছেলে মাসুদ রানা ঐ গৃহবধুকে ঈশ^রদী সরকারী ইক্ষু খামারে চাকরী দেয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। পরে মাসুদ তাকে ইন্টারভিউ দেয়ার জন্য ঈশ্বরদীর পাকশী এলাকার মঞ্জুয়ার রিসোর্টে নেয়। সেখানে একটি কক্ষে ৮ দিন ধরে আটকে রেখে আরো তিন বন্ধুসহ চারজন মিলে তাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে।
এক পর্যায়ে ওই গৃহবধু সুযোগ পেয়ে কৌশলে রিসোর্ট থেকে পালিয়ে একই এলাকার এম এস কলোনীর একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। পরে ঐ বাড়ির লোকজনের সহায়তায় তিনি চিকিৎসা শেষে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। তবে নির্যাতিতা গৃহবধু তার প্রতিবেশী মাসুদ রানার নাম বলতে পারলেও অন্যদের চিনতে না পারায় তাদের পরিচয় জানাতে পারেননি। পাকশী এম এস কলোনীর খানকা শরিফ পাড়া এলাকায় ওই গৃহবধুকে আশ্রয় দেয়া ফাতেমা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছেন।
এদিকে, অভিযুক্ত মাসুদের বাবা ও ভাইসহ কিছু গ্রাম্য প্রধানেরা ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ওই গৃহবধু ও তার স্বজনদের ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছেন বলে তার বড় বোন জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে এব্যাপারে অভিযুক্ত ধর্ষক মাসুদের নিকট জানতে চাইলে তিনি ভুল করেছেন স্বীকার করে সংবাদ প্রকাশ না করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন।
শনিবার বড়াইগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক শামসুল ইসলাম লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে।
র্যাবের মতবিনিময়
এদিকে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে সরকারের জিরোটলারেন্স বাস্তবায়নের লক্ষে নাটোরে কর্মরত সাংবাদিকদের সহযোগীতা চাইলেন র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান-৫ (সিপিসি-২) এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার যায়েদ শাহরিয়ার।
শনিবার সকাল ১১টায় নাটোর সিপিসি-২ এর কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় যায়েদ শাহরিয়ার জানান, তিনি নিজেও ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। একজন সাংবাদিকের কাছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে। তারা জনগনের সাথে নিবিড় ভাবে মিশে অন্যায়কারীদের ভেতরের খবরও বের করে আনতে পারে।
কোন এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসীকে আমরা যদি ধরে আনার পর সেটা প্রকাশ হলে জনগনের মধ্যে সেই সন্ত্রাসীর আতঙ্ক থেকেই যায়। কিন্তু মিডিয়াই খবর প্রকাশ হলে সব এলাকার মানুষই সেটা জানতে পারে। এতে অন্য এলাকার সন্ত্রাসীরাও শাস্তির ভয় পায়। এজন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি। সাংবাদিকদের কাছে থাকা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো র্যাবকে জানালে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকরা বাধার সম্মুখীন হলে সর্বোচ্চ সহযোগীতা আশ্বাস প্রদান করেন তিনি। এ সময় সাংবাদিকদের মাঝে বক্তব্য রাখেন নাটোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জালালউদ্দিন, সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম খান ও রনেন রায় এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল মামুন।