সদ্য শেষ হওয়া দুই ম্যাচের টি-২০ সিরিজে স্বাগতিক ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করে ১২০ রেটিং অর্জন করে আইসিসি টি-২০ র্যাংকিং তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। সিরিজ হারলেও ১২২ রেটিং নিয়ে র্যাংকিং-এ আগের দ্বিতীয় অবস্থানেই আছে ভারত।
টি-২০ সিরিজ শুরুর আগে র্যাংকিং-এ পঞ্চম স্থানে ছিলো অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ম্যাচে ৩ ও দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতে নেয় অসিরা। ফলে ভারতের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে অ্যারন ফিঞ্চের দল। সিরিজ জয়ে আইসিসি র্যাংকিং-এ দুই ধাপ উন্নতি হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া তৃতীয় স্থান দখল করায় চতুর্থ স্থানে নেমে যেতে হলো দক্ষিণ আফ্রিকাকে। তবে সেখানে ইংল্যান্ডের সমান ১১৮ রেটিং রয়েছে প্রোটিয়াদের। ভগ্নাংশের হিসেবে এগিয়ে চতুর্থ স্থানে দক্ষিণ আফ্রিকা।
র্যাংকিং-এ সবার উপরে রয়েছে পাকিস্তান। তাদের রেটিং ১৩৫। ৭৭ রেটিং নিয়ে দশম স্থানে বাংলাদেশ। ষষ্ঠ থেকে নবম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে- নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আফগানিস্তান ও শ্রীলংকা।
বিশ্বকাপ প্রস্ততির ওয়ানডে সিরিজ ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার
দুই ম্যাচের টি-২০ সিরিজ শেষে এবার ওয়ানডে লড়াইয়ে নামছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। শনিবার শুরু হচ্ছে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ, দু’দলই যাকে দেখছে বিশ্বকাপের প্রস্তুতির মঞ্চ হিসেবে। এই সিরিজ দিয়েই বিশ্বকাপের জন্য নিজেদের আরও একবার ঝালিয়ে নিতে মরিয়া ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। হায়দারাবাদে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেটি শুরু হবে দুপুর ২টায়।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের দুর্দান্ত নৈপুন্যের কাছে টি-২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় ভারত। লো-স্কোরিং প্রথম ম্যাচে ৩ উইকেটে ম্যাচ হারে টিম ইন্ডিয়া। এই জয়ের পেছনেও বড় ধরনের অবদান ছিলো ম্যাক্সওয়েলের। ১২৭ রানের টার্গেটে দলের ব্যাটসম্যানরা যখন ব্যর্থ, তখন ব্যাট হাতে ৪৩ বলে ৫৬ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেন তিনি। অবশ্য বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার নাথান কলটার নাইল।
দ্বিতীয় ম্যাচে নিজেদের সেরাটা প্রদর্শন করে ভারতের ব্যাটসম্যানরা। অধিনায়ক বিরাট কোহলির ৩৮ বলে অপরাজিত ৭২ রানের সাথে লোকেশ রাহুলের ২৬ বলে ৪৭ ও মহেন্দ্র সিং ধোনির ২৩ বলে ৪০ রানে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯০ রান করে ভারত। ১৯১ রানের টার্গেট একক প্রচেষ্টায় স্পর্শ করেন ম্যাক্সওয়েল। ৫৫ বলে ১১৩ রান করে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের তরী তীরে ভেড়ান এই মারকুটে ব্যাটসম্যান। এতে ৭ উইকেটের জয়ে সিরিজ নিজেদের করে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
এই সিরিজ জয়কে ওয়ানডে ফরম্যাটে ভালো করার অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার। তবে এই ওয়ানডে সিরিজকে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবেই দেখছেন তিনি, ‘টি-২০ সিরিজে আমরা দারুন খেলেছি। ভারতের মাটিতে এভাবে সিরিজ জয় সত্যিই প্রশংসনীয়। এই সিরিজ জয় আমাদের অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। ওয়ানডেতে ভালো করতে এই আত্মবিশ্বাস কাজে দিবে। তবে এই সিরিজটি আমাদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রস্তুতির মঞ্চ হবে। এখানে আমরা বেশ কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা করবো। এরমধ্যেও সিরিজ জয়ই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য। তবে সিরিজটি বেশ কঠিন হবে। ভারত ওয়ানডেতে অনেক বেশি শক্তিশালী দল। ওয়ানডেতে তাদের বিপক্ষে অনেক বেশি ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে ছেলেদের।’
টি-২০ সিরিজ হেরে হতাশ ভারত। তবে ওয়ানডে নিয়ে তারা নখুব বেশি চিন্তিত নয়। কেননা ৫০ ওভার ফর্মেটে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে তারা। গেল বছরের সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ জয়ের পর টানা তিনটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জিতেছে ভারত। দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এবং বিদেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করে ভারত। তাই দুর্দান্ত ফর্মকে কাজে লাগিয়ে আরও একটি সিরিজ পকেটে ভড়তে চায় বিরাট কোহলির দল। বিশ্বকাপের আগে সিরিজ জিতে নিজেদের শতভাগ চাঙ্গা রাখতে মরিয়া ভারত। এমনটাই বললেন ভারতের কোচ রবি শাস্ত্রী, ‘হেরে যাওয়া টি-২০ সিরিজ নিয়ে আমরা মোটেও চিন্তিত নই। তবে এটি ঠিক, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আমরা নিজেদের সেরাটা খেলতে পারিনি। কিন্তু আমাদের আসল পরীক্ষা ওয়ানডেতে। কারন এই ফরম্যাটে আমরা দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলছি। এছাড়া সামনেই ওয়ানডে বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে ভালো করতে হলে সেরা ফর্ম ধরে রাখতে হবে এবং জয়ের মধ্যে থাকতে হবে। এই সিরিজটি আমাদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই সিরিজ দিয়ে বিশ্বকাপের দলও চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়া খেলোয়াড়দের আরও একবার ভালো করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি ছোট ছোট সমস্যাগুলোও সমাধান করা হবে।’
ওয়ানডেতে এখন অবধি ১৩১ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে ভারত-অস্ট্রেলিয়া। যার মধ্যে ভারত ৪৭টি এবং অসিরা ৭৪টিতে জয় পেয়েছে। তবে সর্বশেষ দুই সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিতেছে ভারতই। ২০১৭ সালে দেশের মাটিতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে এবং গেল জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয় বিরাট কোহলির দল।
ভারত দল (সম্ভাব্য) : বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), রোহিত শর্মা (সহ-অধিনায়ক), লোকেশ রাহুল, শিখর ধাওয়ান, আম্বাতি রাইদু, কেদার যাদব, ঋসভ পান্থ, মহেন্দ্র সিং ধোনি (উইকেটরক্ষক), রবীন্দ্র জাদেজা, জসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সামি, যুজবেন্দ্রা চাহাল, কুলদীপ যাদব, বিজয় শঙ্কর, সিদ্বার্থ কাউল ও মায়াঙ্ক মারকান্ডে।
অস্ট্রেলিয়ার দল (সম্ভাব্য) : অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), প্যাট কামিন্স (সহ-অধিনায়ক), অ্যালেক্স ক্যারি (সহ-অধিনায়ক), জেসন বেহেনডর্ফ, নাথান কটলার-নাইল, পিটার হ্যান্ডসকম্ব, উসমান খাজা, নাথান লিঁও, শন মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, জেই রিচার্ডসন, কেন রিচার্ডসন, ডি’আর্চি শর্ট, মার্কাস স্টোয়িনিস, অ্যাস্টন টার্নার ও অ্যাডাম জাম্পা।