বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের যে উড়োজাহাজটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়েছিল, তার পাইলট ও কেবিন ক্রুদের সাহসিকতা ও দূরদর্শিতার প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওই বিমানের পাইলট ও কেবিন ক্রুদের বৃহস্পতিবার বিকেলে গণভবনে ডেকে নিয়ে পুরো ঘটনার বিবরণ শুনে তাদের ‘হিরো’ অভিহিত করেছেন সরকার প্রধান।
রোববার বিকেলে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পর পলাশ আহমেদ নামে এক যুবক ‘খেলনা পিস্তল’ নিয়ে ক্রুদের জিম্মি করেন বলে জানানো হয়েছিল।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি নিরাপদে অবতরণ করলে যাত্রী এবং কেবিনক্রুরা বাইরে আসার পর কমান্ডো অভিযানে ওই যুবক মারা যান।
প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ছিনতাই চেষ্টা থেকে রক্ষার জন্য বিমানের পাইলট ও ক্রুদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন।
‘গতকাল গণভবনে বিমানের পাইলট ও কেবিন ক্রুরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধানমন্ত্রী তাদের হিরো আখ্যায়িত করে তাদের সাহসিকতা ও দূরদর্শিতার জন্য এই অভিনন্দন জানান।’
আশরাফুল আলম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোনো রকমের প্রাণহানি ও সম্পদহানি ছাড়া বিমান ছিনতাই ঘটনার অবসান হওয়া বিশ্বে নজিরবিহীন।’
বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের ওই উড়োজাহাজটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই নিয়ে যাচ্ছিলেন পাইলট গোলাম শফী।
উপপ্রেস সচিব খোকন বলেন, ‘বিমানের পাইলট গোলাম শফী সেদিনের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী তা গভীর মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং পাইলট ও কেবিনক্রুদের দক্ষতা ও দূরদর্শিতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।’
সেই দিনের ফ্লাইটের ফার্স্ট অফিসার মুনতাসির মাহবুব ও পাঁচ কেবিনক্রু উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়াও বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সচিব মহিবুল হক এবং বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসাদ্দেক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এই সঙ্কটের প্রত্যক্ষদর্শী সংসদ সদস্য মইন উদ্দিন খান বাদল যাত্রীদের বাঁচানোসহ পুরো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাহসী ভূমিকার জন্য পাইলট শফী ও কেবিনক্রুদের পুরস্কৃত করার দাবি জানিয়েছিলেন।
সেদিন শাহ আমানত বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকা বাদল পরে সংসদে বলেন, ‘পাইলট অত্যন্ত দূরদর্শিতার সাথে, ঠাণ্ডা মাথায়, সাহসিকতার সাথে চট্টগ্রামে প্লেনটি ল্যান্ড করে।’
কেবিনক্রুদের প্রশংসা করে তিনি বলেছিলেন, ‘তারা বিজনেস ও ইকোনমি ক্লাসের পর্দা টেনে দিয়ে দরজা খুলে দেয়। যাতে যাত্রীরা নেমে আসতে পারে।’
‘আমাদের দেশে রিয়েল হিরোরা স্বীকৃতি পায় না। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাব, এদের যথাযথভাবে পুরস্কৃত করা উচিত,’ বলেছিলেন বাদল।