ভারতীয় পাইলটকে মুক্তির সিদ্ধান্তের নেপথ্যে

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ভারতের কাছে শান্তির বার্তা পৌছে দিতেই আটককৃত ভারতীয় পাইলটকে শুক্রবার মুক্তি দেবে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার এক ভাষণে এই ঘোষণা দেন ইমরান খান।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পার্লামেন্টের সিনেট ও জাতীয় পরিষদের এক যৌথ অধিবেশনে সংসদ সদস্যদের সামনে বক্তব্য দেয়ার সময় এই কথা বলেন ইমরান খান। এখানে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সাথে সাম্প্রতি উত্তেজনা, হামলা ও পাল্টা হামলার বিষয়েও পার্লামেন্ট সদস্যদের অবগত করা হয়।

পাকিস্তান বরাবরই শান্তির পক্ষে উল্লেখ করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত না করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেন, এটাকে আর টেনে নেবেন না, পাকিস্তান প্রতিশোধ নিতে বাধ্য হবে।

তিনি বলেন, পাকিস্তান শান্তির পক্ষে এবং ইসলামাবাদের এই অবস্থানকে দুর্বলতা হিসেবে বিবেচনা করা হলে ভুল হবে। ভারতের সাথে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মাঝে তাকে ও তার দলকে সমর্থন দেয়ায় ভাষণে বিরোধী দলগুলোকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন,‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর আমি নয়া দিল্লীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করি। জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের এক ফাঁকে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক আয়োজনের ব্যাপারে আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটা চিঠিও লিখেছিলাম। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া পাইনি।’

প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আরো বলেন, ইসলামাবাদ বুঝতে পেরেছে যে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে পাকিস্তানের সাথে ভালো ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না মোদী নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার। তিনি বলেন,‘এই বিষয়টি ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নির্বাচনী ইশতেহারেও ছিল না। আমরা ভারতের সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমরা ইতিবাচক ভাবে শান্তির বার্তা পৌছে দিতেই কারতারপুর করিডোর খুলে দিয়েছিলাম।’

প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আরো বলেন,‘এরপরই ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটলো। হামলা হওয়ার আধা-ঘণ্টার মধ্যেই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করে ভারত। তখন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ইসলামাবাদ সফর করছিলেন। আমরা কেন আমাদের জাতীয় স্বার্থের সাথে সংশ্লিষ্ট একটি সফর ও সম্মেলনকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো কাজ করবো? আর এ থেকে আমরা কি অর্জন করতে পারবো?’

এরপর টেলিভিশনে তার দেয়া একটি ভাষণের কথা উল্লেখ করে ইমরান খান বলেন,‘পুলওয়ামা হামলার পর এর তদন্ত ও বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের ব্যাপারে আমরা ভারতকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। বলেছিলাম পাকিস্তানের কোনো নাগরিক এই হামলায় জড়িত এমন কোনো তথ্য থাকলে তা আমাকে দিন, আমি আপনাদের কাজে সহায়তা করবো। কিন্তু সেটা না করে ভারত যুদ্ধের পথ বেছে নিল। দায়িত্বশীল আচরণ ও সঠিক সংবাদ প্রকাশের জন্য আমি পাকিস্তানের গণমাধ্যমের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে চাই। আমাদের গণমাধ্যম যুদ্ধে প্ররোচণা দেয়ার মতো কাজে সংশ্লিষ্ট হয়নি।’

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, কোনো দেশই চায় না তাদের স্বার্বভৌমত্বকে আক্রমণ করা হোক। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও পাকিস্তানে হামলা চালানোর পর ভারত আজ আমাদের হাতে তথ্য তুলে দিয়েছে। তিনি বলেন, ভারতের নৃশংসতার কারণে কাশ্মীরিরা স্বাধীনতা চান।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top