হ্যামিল্টনে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন ইবাদত হোসেন। আট ওভার বল করে ২৬ রান দিয়েছেন তিনি। মেডেন একটি। উইকেট শূন্য। অথচ নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় বলেই উইকেট পেতে পারতেন ইবাদত। নাম লেখাতে পারতেন বিরল রেকর্ডে।
নিউজিলান্ডের তখনো রানের খাতা খোলা হয়নি। দলীয় দ্বিতীয় ওভারে বল করতে আসেন ইবাদত। টম ল্যাথাম তখন স্ট্রাইকে। ল্যাথাম ইবাদতের প্রথম বলটি ঠেকালেন। দ্বিতীয় বলেই তিনি লোপ্পা ক্যাচ দিয়েছিলেন স্লিপে। স্লিপে দাঁড়ানো যে কোনো ফিল্ডারের জন্য খুব সাধারণ একটি ক্যাচ। কিন্তু দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো সৌম্য সরকার সেই ক্যাচটি ধরতে পারেননি। ফলে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ওভারে উইকেট পাওয়ার সেই গৌরব থেকে বঞ্চিত হলেন ইবাদত।
সৌম্য সরকার যখন ক্যাচ ফেললেন, তখন শুধু ল্যাথাম নয়, রানের খাতা খোলা হয়নি নিউজিল্যান্ডই। কিউইদের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে মাত্র ২৩৪ রান করে আউট হওয়ার পর দলের মনোবল ফেরাতে খুবই দরকারি ছিল এ উইকেটটি। সৌম্য ক্যাচটি ধরতে পারলে বাংলাদেশের সাফল্যের সাথে সাথে ক্যারিয়ারের প্রথম ওভারে উইকেট পাওয়ার বিরল রেকর্ডেও নাম ওঠাতে পারতেন ইবাদত হোসেন।
টম ল্যাথাম নিউজিল্যান্ডের একজন স্বীকৃত ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগের সিরিজের দুই ম্যাচে ২৬৪ ও ১৮৬ রানের দুটি ইনিংস আছে কিউই এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের। ওই দুই ম্যাচে ৪৫০ রান করেছিলেন ল্যাথাম।
বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নেমে প্রথম দিন শেষে নিউজিল্যান্ডের রান কোনো উইকেট ছাড়াই ৮৬। যেখানে ল্যাথামের অবদান ৩৫। এ ল্যাথাম যদি বড় ইনিংস খেলেই বসেন তাহলে আক্ষেপে পুড়তে পারেন সৌম্য।
এমনিতেই ব্যাট-বল কোনোটিই তার হয়ে কথা বলছে না। টিম সাউদির করা বল যখন তার গ্লাভস ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে জমা পড়ল, তখন তার সংগ্রহ ছিল মাত্র ১ রান! বল করেছেন এক ওভার। তাতে রান দিয়ে বসেছেন ৮টি। সব মিলিয়ে প্রথম দিনের বিচারে বলা যায়, তিন বিভাগেই ব্যর্থ হয়েছেন সৌম্য সরকার।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমেছিল বাংলাদেশ। শুরুটা ভালোই ছিল। অভিজ্ঞ তামিম ইকবালের সাথে শাদমান ইসলাম চমৎকার সূচনা করেন। তারা উদ্বোধনী জুটিতে হাফসেঞ্চুরি পার করে দেন। ওপেনার সাদমান ইসলাম দলীয় ৫৭ রানে মাথায় ট্রেন্ট বোল্টের বলে বোল্ট আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। তার ব্যাট থেকে আসে ৩২ বলে ২০ রান। আর মুমিনুল হক ফিরে গেছেন ১২ রান করে। আর মিথুন বিদায় নেন ৮ রান করে। সৌম্য সরকার করেছেন ১ রান। আর তামিম ইকবাল ১২৬ রান করে আউট হয়েছেন। এরপর মাহমুদুল্লাহ ২২, মিরাজ ১০, আবু জায়েদ ২, খালেদ আহমদ ০ এবং লিটন দাস ২৯ রান করে আউট হয়ে যান। অতিরিক্ত থেকে আসেনি একটি রানও। ফলে ৫৯.২ ওভারে যখন বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যায়, তখন টাইগারদের মোট রান ২৩৪।
বাংলাদেশ দলের একাদশ: তামিম ইকবাল, সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক, সৌম্য সরকার, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ মিথুন, মেহেদি হাসান, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ ও ইবাদত হোসেন।
নিউজিল্যান্ড একাদশ : টম লাথাম, জিত রাভাল, কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), রস টেইলর, ওয়াটলিং (উইকেটরক্ষক), হেনরি নিকোলস, কলিন ডি গ্র্যান্ডহ্যাম, টোড অ্যাস্টল, ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি।