পারমাণবিক হামলা চালালে মস্কো যুক্তরাষ্ট্রের কোন কোন সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানতে পারে এমন টার্গেটগুলোর একটি তালিকা সম্প্রচার করেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। ক্রেমলিন যে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে তা ওই সব লক্ষ্যস্থলে ৫ মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে আঘাত হানতে পারবে বলেও দাবি করছে তারা। রোববার সন্ধ্যায় রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সংবাদভিত্তিক ওই অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হয়। মার্কিন লক্ষ্যস্থলের এ তালিকায় পেন্টাগন এবং মেরিল্যান্ডের ক্যাম্প ডেভিডে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবকাশ যাপন কেন্দ্রের নামও আছে ।
যুক্তরাষ্ট্র চাইলে রাশিয়াও আরেকটি ‘কিউবান-স্টাইল মিসাইল ক্রাইসিসের’ জন্য প্রস্তুত বলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের এমন হুঁশিয়ারির একদিন পর দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে এ তালিকা প্রকাশ করা হলো। সাপ্তাহিক ‘ভেস্তি নেদেলি’ অনুষ্ঠানে উপস্থাপক দিমিত্রি কিসলেয়ভ যুক্তরাষ্ট্রের একটি মানচিত্র দেখিয়ে পারমাণবিক হামলার সময়ে কোন কোন স্থাপনা মস্কোর লক্ষ্যস্থলে থাকতে পারে তার তালিকা দেন। এ তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ফোর্ট রিচি, ক্যালিফোর্নিয়ার বিমান ঘাঁটি ম্যাকক্লেলান ও ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের নৌ যোগাযোগ ঘাঁটি জিম ক্রিকও আছে। ফোর্ট রিচি ও ম্যাকক্লেলানের স্থাপনা দু’টি যুক্তরাষ্ট্র যথাক্রমে ১৯৯৮ ও ২০০২ সালে বন্ধ করে দেয়।
অনুষ্ঠানের ক্রেমলিনঘনিষ্ঠ উপস্থাপক কিসেলেয়ভ বলেন, রাশিয়া যে ‘শেরকোন’ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে, সাবমেরিন থেকে ছোড়া হলে তা ৫ মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে এসব মার্কিন লক্ষ্যস্থলে আঘাত হানতে পারবে। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সাধারণত বায়ুমণ্ডল দিয়ে শব্দের চেয়েও ৫ গুণ গতিতে উড়ে যায়। কিসেলেয়ভ বলেন, এখন আমরা কাউকে হুমকি দিচ্ছি না। কিন্তু যদি এ ধরনের কিছু মোতায়েন হয়, তাহলে আমাদের প্রতিক্রিয়া হবে তাৎক্ষণিক। রাশিয়ার এ উপস্থাপকের মার্কিনবিরোধী অবস্থান নতুন নয়। রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে তেজস্ক্রিয় ছাইয়ে পরিণত করতে পারে বলে এর আগে এক মন্তব্যে বলেছিলেন তিনি।
কিসেলিয়ভের মন্তব্য নিয়ে জানতে চাইলে ক্রেমলিন বলেছে, তারা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিতে হস্তক্ষেপ করে না। পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, মার্কিন তিনদশক আগে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে স্বাক্ষরিত একটি ‘অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি’ থেকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে আনার ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়ছে।