ভারতের যুদ্ধবিমানের লাইন অব কন্ট্রোল লঙ্ঘনের অভিযোগ করে ইসলামাবাদ জানিয়েছে, পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর তাৎক্ষণিক ধাওয়ার মুখে সেগুলো পালিয়ে যায়। পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশন্সের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক আসিফ গফুর তার অফিসিয়াল টুইটারে মঙ্গলবার ভোরে এ কথা জানান।
পরে তিনি আরো জানান, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীয় সময়োপযোগী ও কার্যকর প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়ে এলওসি লঙ্ঘনকারী ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলো। এমনকি পালানোর সময় তারা বালাকোটে তাদের পেলোড ফেলে যায়। সাধারণত বিমানে বহন ক্ষমতা পরিমাপের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। এটি দিয়ে কার্গো, যাত্রী, বিস্ফোরকসহ বিভিন্ন ধরনের ওজন পরিমাপ করা হয়।
তবে এর ফলে পাকিস্তানে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
অন্য আরেক টুইটে তিনি বলেন, ভারতের যুদ্ধবিমানগুলো মুজাফফরাবাদ সেক্টরের এলওসি লঙ্ঘন করে আজাদ কাশ্মিরের তিন চার মাইল ভিতরে ঢুকে যায়।
এদিকে ভারতের এ পদক্ষেপকে দেশটির নির্বাচনের সাথে যুক্ত করে বলা হয়, আমরা বুঝতে পারছি, এটা নির্বাচনের বছর। এবং সীমান্তজুড়ে তাদের সেনাবাহিনীর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। আসলে ব্যাপার হল, পাকিস্তানের পেট্রোল বাহিনীর তাড়া খেয়ে তারা দ্রুত পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় এবং দ্রুততার জন্য তারা কিছু জ্বালানি তেলও ফেলে যায়। যেটাকে তারা বোমা ফেলেছে বলে দাবি করছে।
তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি তার জাপান সফর বাতিল করেছেন।
পুলওয়ামাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া
কাশ্মিরের পুলওয়ামায় ভারতের আধা সামরিক বাহিনী সিআরপিএফের কনভয়ের ওপর ১৪ ফেব্রুয়ারি এক আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় সিআরপিএফের ৪৯ জন সদস্য নিহত হয়। ভারত এ জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে তাদের একঘরে করে ফেলতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আহ্বান জানায়।
কিন্তু তাদের ডাকে সে রকম সাড়া মেলেনি। বরং চীন পাকিস্তানের পক্ষ নেয়। আবার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানও পাকিস্তান সফরে গিয়ে বড় ধরনের বিনিয়োগের ঘোষণা দেন। ফলে হতাশাগ্রস্ত ভারত একাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিতে থাকে।
এদিকে অব্যাহতভাবে এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করতে থাকায় এক পর্যায়ে মুখ খোলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি ভারতের প্রতি আহ্বান জানান, যদি এক্ষেত্রে পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ থাকে তাহলে তা যেন ইসলামাবাদকে দেয়া হয়। ইসলামাবাদ এ ব্যাপারে কড়া ব্যবস্থা নেবে। অন্যথায় পাকিস্তানে যদি কোনো ধরনের হামলা হয় তাহলে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীও এর সমুচিত জবাব দেবে।
এরপর ভারতের প্রধানমন্ত্রী আবারো চ্যালেঞ্জ দেন ইমরান খানকে। তিনি বলেন, যদি ইমরান খান পাঠানের সন্তান হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি যেন পুলওয়ামার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেন। এর জবাবে ইমরান খান বলেন, আমাদেরকে শান্তি প্রতিষ্ঠার আরেকটি সুযোগ দিন। ওই হামলার সাথে সম্পৃক্তদের ব্যাপারে তথ্য দিন। আমরা প্রমাণ করে দেব, আমরা শান্তির পক্ষে।