আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে ভারত : পাকিস্তানের অভিযোগ

পাকিস্তান দাবি করছে, ভারতের বিমানবাহিনী লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) লঙ্ঘন করেছে। কাশ্মিরের পুলওয়ামা নিয়ে দুই দেশের উত্তেজনার মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর মঙ্গলবার এক টুইটে জানান, ভারতের বিমানবাহিনী এলওসি লঙ্ঘন করে পাকিস্তানের সীমায় চলে আসে। এ সময় পাকিস্তানের বিমানবাহিনী তাদের তাড়া দিলে ভারতের বিমানগুলো নিজেদের সীমানায় ফিরে যায়।

গত শুক্রবার পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া নিজেদের অধিকৃত কাশ্মির সীমান্তে সেনা মোতায়েন পরিদর্শন করেন। ওই সময় তিনি তাদেরকে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

গত সোমবার তিনি রাওয়ালপিন্ডিতে প্রধান সেনা দপ্তর পরিদর্শন করে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হন এবং লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি), এলওসি ও ওয়ার্কিং বাউন্ডারিতে (ডাব্লিউবি) সর্বদা সতর্কতা অবলম্বন করতে নির্দেশ দেন।

মুখপাত্র গফুর আরো জানান, সেখানে তিনি বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মুজাহিদ আনওয়ার খানের সাথে বৈঠক করেন। এ সময় উভয়ে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও হুমকির পরিস্থিতিতে নিজেদের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। একই সময়ে তারা সামরিক বাহিনীর প্রস্তুতি, সহযোগিতা ইত্যাদি বিষয়েও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতি বোমা হামলায় ভারতের আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফের ৪৯ জন সদস্য নিহত হয়। এ ঘটনায় দায় স্বীকার করে জয়েশ-ই মোহাম্মদ। এর পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ভারতের সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনীয় সব স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এর জবাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, যদি এ ব্যাপারে কোনো প্রমাণ থাকে তাহলে আমাদের কাছে দিন, আমরা এ ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। আর যদি ভারত এ প্রস্তাব না মেনে হামলা চালায়, তাহলে পাকিস্তানও এর সমুচিত জবাব দেবে।

ভারত প্রথমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ ব্যাপারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আশা করেছিল। কিন্তু কিছু দেশ এ হামলার নিন্দা করলেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থার নেয়ার কথা জানায়নি। এমনকি পাকিস্তানকে একঘরে করে ফেলতে মোদি যে আহ্বান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রেখেছিলেন, তাতেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। চীনের বাধায় তা বাস্তবায়িত হতে পারেনি। উল্টো সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানও পাকিস্তানের প্রতি যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন, তাতেও অস্বস্তিতে পড়ে ভারত।

ফলে ভারত নিজেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। বাণিজ্যে পাকিস্তান ভারতে যে বিশেষ সুবিধা পেত, ভারত তা বাতিল করে দেয়। পাশাপাশি পাকিস্তান থেকে আগত সব ধরনের পণ্যে দুইশ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top