বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় কোনো ত্রুটি নেই : প্রতিমন্ত্রী

হযরত শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে যে ধরনের নিশ্চিদ্র নিরপত্তা ও তল্লাশী ব্যবস্থা রয়েছে, তাতে অস্ত্র নিয়ে উড়োজাহাজে যাওয়া সম্ভব নয়। সোমবার ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী একথা বলেন।

তিনি বলেন, বিমানবন্দরের তল্লাশী ব্যবস্থায় অস্ত্র নিয়ে গেলে সেটি দৃশ্যমান হয়। সবকিছু খতিয়ে দেখা হয়েছে। অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার মতো কিছু পাওয়া যায়নি। এনিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ছিনতাই চেষ্টার প্রকৃত ঘটনা আগামী পাঁচদিনের মধ্যে জানা যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এরপর প্রতিমন্ত্রী বিমানবন্দরের পুরো তল্লাশী ব্যবস্থা কিভাবে কাজ করে, সেটি সাংবাদিকদের দেখান।

ঢাকা-চট্টগ্রাম-দুবাইগামী বিমানের ফ্লাইটটি (বোয়িং) চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণ করেনি জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রুটিন ওয়ার্ক হিসাবে বিমানটি চট্টগ্রামে যাত্রা বিরতি করেছিল। এখানে ইমার্জেন্সি ল্যান্ডিং ছিল না। এখানে এমন কোনও লিকেজ ছিল না বা নেই যে একজন যাত্রী এভাবে বিমানে যেতে পারেন।’ এ ধরনের একটি ঘটনায় কোনো ক্যাজুয়ালটি ছাড়া যাত্রীরা নিরাপদে বের হয়ে এসেছেন। তিনি ইতিবাচক খবর প্রচার করার আহ্বান জানান।

বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক বলেন, আমরা সাংবাদিকদের নিরাপত্তার সব বেষ্টনী এবং ধাপগুলো ঘুরে ঘুরে দেখিয়েছি। এখানে যে কোনো বস্ত স্ক্যানারে ধরা পড়ার কথা। তার সাথে কিছু ছিল না- আপাতত আমরা এটা বলতে পারি। এ ধরনের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পিস্তল নিয়ে বিমানে ওঠা সম্ভব নয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটি কোনো খেলনা পিস্তল ছিল কি না- এই মুহূর্তে এটিও বলা ঠিক হবে না। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ। তদন্ত দলের প্রতিবেদনের পরই বুঝতে পারবো, এটি অস্ত্র নাকি খেলনা অস্ত্র। না অন্য কিছু।’  বিমান প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘সিসি ক্যামেরার রিপোর্টটি আমরা দেখেছি। আর দশ জন যাত্রীকে যেভাবে তল্লাশী (স্ক্যান) করা হয়, স্ক্রিনিং হয়, সেভাবেই হয়েছে। আনসাররা তাঁকে চেক করেছে। তাঁর ঘাড়ে ব্যাগ ছিল, সেটি স্ক্যানিং মেশিনের ভেতর দিয়ে গেছে। স্ক্যানিং মেশিনে কোনো কিছু শো করেনি। লাল বাতি জ্বলেনি যে সেখানে কোনো কিছু আছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাইম হাসান বলেন, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে রোববার রাতে বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজ ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ করছে। কমিটির সদস্যরা উড়োজাহাজে থাকা পাইলট ও ক্রুদের সঙ্গে কথা বলবেন। সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কথা বলা হবে।

তিনি বলেন, তিনটা শব্দ হয়েছে। যাত্রী ও ক্রুদের জিজ্ঞেস করেছি। তারা বলেছেন, যে ধোঁয়া বের হয়েছে। গুলি বের হলে এয়ারক্রাফটে ছিদ্র হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এ ধরনের কোনো প্রমান পাইনি। খেলনা পিস্তল হলেও ঠুস ঠুস শব্দ হয়।

উল্লেখ্য ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজটি (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রোববার বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। যাত্রী নিয়ে উড়োজাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরই উড়োজাহাজটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। প্রায় দুই ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর উত্তেজনার পর উড়োজাহাজ ছিনতাই চেষ্টার অবসান ঘটে। রোববার রাত ৭টা ২৪ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে মাত্র আট মিনিটের কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজটিতে থাকা অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হয়। যাত্রী ও ক্রুরা সবাই নিরাপদেই বিমান থেকে বের হতে পেরেছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top