জিএম ধান চাষের অনুমোদনে দেশের ধানের বৈচিত্র্যে হুমকি হবে

দেশে এ মুহূর্তে জেনেটিকালি ইঞ্জিনিয়ার্ড বা জিএম ধানের মাঠ পর্যায়ে চাষের অনুমোদন দেয়া হলে বাংলাদেশের ধানের বৈচিত্র এবং ধান চাষের ওপর হুমকি সৃষ্টি হবার আশঙ্কা রয়েছে। সরকারকে এব্যাপারে বিবেচনা রাখতে হবে।

আজ উবিনীগ, নারী গ্রন্থ প্রবর্তনা এবং নয়াকৃষি আন্দোলনের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশঙ্কার জানান হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বেসরকারি উন্নডন সংস্থা উবিনীগ-এর প্রধান ফরিদা আখতার। অন্যদের মধ্যে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ , বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, উবিনীগের সীমা দাস সীমু।

সম্প্রতি আর্ন্তজাতিক ধান গবেষণা সংস্থার (ওজজও) অনুরোধে বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয় গোল্ডেন রাইসের নামে জেনেটিকালি ইঞ্জিনিয়ার্ড বা জিএম ধান মাঠ পর্যায়ে চাষের জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুমোদন চেয়েছে। এ নিয়ে বিতর্কিত জিএম খাদ্য ফসল মাঠ পর্যায়ে বা কৃষক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার এটি দ্বিতীয় উদ্যোগ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, তারা বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জিএম ধান,তথা জিএম ফসলের নেতিবাচক প্রভাবের বিরুদ্ধে তীব্র জনমত গড়ে উঠেছে। কিন্তু বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানির স্বার্থে অনায়াসে ছাড় দেয়া হচ্ছে।

ফরিদা আকতার বলেন, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র,কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া গোল্ডেন রাইস নিরাপদ,শরীরের জন্য এতে কোনো ঝুঁকি নেই বলে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কিন্তু এ তথ্যের কোনো প্রাসঙ্গিকতা নেই। কারণ এদেশগুলির মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষি এবং বিশেষ করে ধান উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল এবং এখানে প্রধান খাদ্য ভাত। কাজেই যুক্তরাষ্ট্র,কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া গোল্ডেন রাইস নিরপদ বলে অনুমোদন দিলেও এর সাথে পরিবেশ, প্রাণবৈচিত্র্য ও স্বাস্থ্যের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তাছাড়া এখনো এশিয়ার কোনো দেশে গোল্ডেন রাইস ছাড় পায়নি। বিশেষ করে ফিলিপাইনে পরিবেশ আন্দোলন আন্দোলনের বিরোধিতার এ ধান অনুমোদন পায়নি। ফিলিপাইনের সরকারি বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্টানের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, কোম্পানির ল্যাবরেটরির বাইরে গোল্ডেন রাইস নিরপদ, এমন কোনো প্রমাণ এখনো তারা দিতে পারেনি।

তিনি বলেন, ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা দমনের কথা বলে ‘বিটি বেগুন’ প্রবর্তনের সময় যে সব দাবি করেছিল তা সত্য প্রমাণিত হয় নি। তা সত্বেও নতুন আর একটি জিএম ফসল কেন ছাড় দেয়া হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন জাগছে। কারণে সরকার বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর স্বার্থই দেখছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top