ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির হুঙ্কার বা চ্যালেঞ্জের জবাবে গরম কোনো বক্তব্য দেননি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বরং শান্তির বার্তা জানিয়ে তিনি বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি সুযোগ দিন।
কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় ভারতের আধাসামরিক বাহিনীর ৪৪ জন সদস্য নিহত হওয়ার পর ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল।
প্রথম দিকে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করা হলেও পরে নাম উল্লেখ করেই পাকিস্তানকে লক্ষ্য হুঙ্কার দিতে শুরু করেছিলেন রাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে খেলোয়াড়, অভিনেতাসহ সবাই।
এর ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরানের খানের প্রতি আরেক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেছিলেন, ইমরান খান যদি পাঠানের সন্তান হয়ে থাকেন, তাহলে পুলওয়ামায় নিহত জওয়ানদের পরিবারের সঙ্গে অন্যায় হতে দেবেন না তিনি। তারা যাতে সুবিচার পান সেটা নিশ্চয়ই তিনি দেখবেন। তার এ কথার জবাবে শান্তির বার্তা দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, শান্তি স্থাপনের সুযোগ দিন।
তাছাড়া পুলওয়ামার হামলা সম্পর্কে যদি ভারত পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ দিতে পারে তাহলে ব্যবস্থা নেবে পাকিস্তান। কয়েক মাস আগে সে দেশের নির্বাচনে জিতেছেন ইমরান। প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার পর মোদির সঙ্গে কথা হয় তার।
আলোচনার এক জায়গায় মোদি বলেন, আমাদের গরিব মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। এতে সম্মত হয়ে ইমরান জানান তিনি পাঠানের পুত্র। কথা দিলে কথা রাখেন। সেই সূত্র ধরেই ইমরানের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন মোদি।
শুধু তাই নয় রাজস্থানের একটি সভা থেকে কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, সন্ত্রাস মোকাবিলায় গোটা বিশ্ব এক ছাতার তলায় এসে দাঁড়িয়েছে। যারা সন্ত্রাসবাদকে মদত না করে আমরা তাদের শেষ করতে চলেছি। ভারত এখন এক অন্য দেশ। এবারের যন্ত্রণা সহ্য করা হবে না।
এর জবাবে গত রোববার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর একটি বিবৃতি জারি করে। তাতে বলা হয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার আগের বক্তব্যে স্থির রয়েছেন। ইমরান খান আবারো বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি সুযোগ দিন। দিল্লি যদি পুলওয়ামার সঙ্গে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ দেখাতে পারে তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কড়া ব্যবস্থা নেবে ইসলামাবাদ।
গত সপ্তাহেও একই কথা বলেছিল পাকিস্তান। তবে ভারত মনে করছে, বিষয়টিকে দায় এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল হিসেবেই এ বক্তব্য দিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, সবাই জানে মাওলানা মাসুদ আজহার পাকিস্তানে থাকে। আর এই হামলার দায় নিয়েছে তার সংগঠন জয়েশ-ই-মোহাম্মদ।
কাশ্মিরের পুলওলামায় ১৪ ফেব্রুয়ারি আত্মঘাতী বোমা হামলায় সিআরপিএপের ৪৪ সদস্য নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানকে দোষারোপ করে ভারত। বিভিন্ন মহলে তারা চেষ্টা চালায় পাকিস্তানকে এক ঘরে করার। তাতে সফল না হয়ে অর্থনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে দুর্বল করার জন্য ভারতে পাকিস্তানের বাণিজ্যের বিশেষ সুবিধা বাতিল করে এবং পাকিস্তান থেকে আসা সব পণ্যের ওপর দুইশ শতাংশ শুল্কারোপ করে। এ সময় বিভিন্ন স্থানে কাশ্মিরিদের ওপর হামলা চালানো হয়।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া