কাশ্মিরে আবারো ব্যাপক সংঘর্ষে সেনা-পুলিশ নিহত

ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে জয়েশ-ই মোহাম্মদ সদস্যদের সাথে ভারতীয় সেনা-পুলিশের আবারো বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন রাজ্য পুলিশের এক ডেপুটি সুপার ও এক নন-কমিশন্ড সেনা-অফিসার। অপরদিকে জয়েশ-ই মোহাম্মদের তিন সদস্য নিহত হয়েছে।

পুলওয়ামার ১৪ ফেব্রুয়ারির আত্মঘাতী হামলার পরপরই ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল কাশ্মিরে। গোয়েন্দাসূত্রগুলো আবারো সেখানে হামলার আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার রাতে ১০০ কোম্পানি সেখানে পাঠানো হয়। সে সময় সেখানে ইয়াসিন মালিকসহ প্রায় ২০০ জন স্বাধীনতাকামী নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এসব ঘটনায় নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন কাশ্মিরবাসী।

রোববার কুলগামের তুরিগাম এলাকায় স্বাধীনতাকামীদের গতিবিধির খবর পেয়ে অভিযানে নামে বাহিনী। এ অভিযানে ভারতীয় পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ২০১১ ব্যাচের জম্মু-কাশ্মির পুলিশ সার্ভিস অফিসার আমন কুমার ঠাকুর। অভিযানের সময় জয়েশ-ই মোহাম্মদের সদস্যদের গুলিতে নিহত হন তিনি। নিহত হয়েছেন নন-কমিশন্ড সেনা-অফিসার সোমবীরও। আহত হন এক মেজরসহ আরো দুই সেনা।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, এ সংঘর্ষে বিপক্ষের তিনজন নিহত হয়েছে। তারা জানিয়েছে ওই নিহতরা জয়েশ-ই মোহম্মদের সদস্য।

শুক্রবার রাতের ধরপাকড়ের প্রতিবাদে রোববার হরতালের ডাক দেয়া হয়েছিল স্বাধীনতাকামীদের পক্ষ থেকে। এ ডাকে সাড়া দিয়ে সকাল থেকেই একেবারে খালি ছিল শ্রীনগরসহ কাশ্মিরের প্রায় সব বড় শহরের পথঘাট। বন্ধ ছিল দোকানপাট, অফিস। চলেনি সরকারি যানবাহনও। এ অবস্থায় শ্রীনগরের পাঁচটি থানার অধীনে থাকা এলাকায় যাতায়াত ও জমায়েতের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।

এদিকে জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত ৩৫এ অনুচ্ছেদের বিরুদ্ধে মামলায় সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার ‘কড়া অবস্থান’ নিতে পারে বলে নানা শিবির থেকে দাবি করা হয়েছিল। তার জেরে গোলমাল হতে পারে ভেবেই অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে দাবি করেছিল স্বাধীনতাকামীরা। তবে রাজ্যপালের প্রশাসন জানিয়েছে, এটি পুরোটাই গুজব। কারণ রাজ্যে নির্বাচিত সরকার না থাকলে এই বিষয়ে নয়া অবস্থান নেয়া সম্ভব নয় বলেই ফের শীর্ষ আদালতে জানাবে জম্মু-কাশ্মির সরকার।

কাশ্মিরের পুলওলামায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় সিআরপিএপের ৪৪ সদস্য নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানকে দোষারোপ করে ভারত। বিভিন্ন মহলে তারা চেষ্টা চালায় পাকিস্তানকে এক ঘরে করার। তাতে সফল না হয়ে অর্থনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে দুর্বল করার জন্য ভারতে পাকিস্তানের বাণিজ্যের বিশেষ সুবিধা বাতিল করে এবং পাকিস্তান থেকে আসা সব পণ্যের ওপর দুইশ শতাংশ শুল্কারোপ করে।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতের এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে পাল্টা হুমকি দেন ইমরান খান। তিনি বলেন, পাকিস্তান কোনোভাবেই এ হামলার সাথে জড়িত নয়। ভারতে কোনো কিছু হলেই তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলে থাকে। এ হামলায় যদি পাকিস্তান সম্পৃক্ত থাকে, তাহলে এর প্রমাণ আমাদের দিন, আমরা এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেব।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top