ভারত যে যুদ্ধের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে, তা দ্রুত বন্ধ করতে হবে। পুলওয়ামায় ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলার পরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে একটা টেনশন তৈরি হয়েছে। যুদ্ধের প্রস্তুতি দুই দেশেরই। সেখানে দাঁড়িয়ে এমনটাই মন্তব্য করলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কোরাইশী। তার মতে, পাকিস্তানকে কাবু করার কোনো ইচ্ছা যদি ভারতের থাকে, তাহলে বিষয়টি তাদের ভুলে যেতে হবে।
রোববার পাকিস্তানকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কোরাইশী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কোরাইশী জানান, পাকিস্তান একটি শান্তিবাদী দেশ। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে পাকিস্তান শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকতে চায়। কিন্তু আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ভারত যে যুদ্ধের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে, তা দ্রুত বন্ধ করতে হবে।
মাহমুদ কোরাইশী বলেন, কাশ্মীর ইস্যুতে পুরো জাতি এক হয়েছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, রাজনৈতিক দল এমনকি শিশুরাও কাশ্মীরের স্বাধীনতার পক্ষে। ভারত যেন এদিকে তাকাবারও দুঃসাহস না করে। পুরো কাশ্মীরজুড়ে এখন ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ভারতীয় বাহিনী নিরীহ নাগরিকদের বিনা অপরাধে গ্রেফতার চালাচ্ছে। কাশ্মীরি জনগণের বাড়িঘরে লুটপাট করছে।
একই সঙ্গে বিজেপিকেও একহাত নিয়েছে কোরাইশী। তার অভিযোগ, রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যই ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) যুদ্ধপরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। যুদ্ধ কোনো ভালো কাজ নয় মন্তব্য করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার জানা আছে বহু সুস্থ চিন্তার বিবেকবান মানুষও ভারতে রয়েছে। ভারত সরকারকে তারা চিন্তাভাবনা করে কাজ করার আহ্বান জানাবেন বলে আমি মনে করি।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জনের বেশি সিআরপিএফ সৈন্য নিহত হয়। জইশ-ই-মোহাম্মদ এই ঘটনার দায় স্বীকার করে। এরপরেই নানাভাবে পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে ভারত। কূটনৈতিক দিক থেকে তো বটেই, সামরিক ক্ষেত্রেও পাকিস্তানকে জবাব দেয়া হবে তা ইতিমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
কাশ্মিরে এবার সৈনিক ও পুলিশ অফিসার নিহত
জম্মু কাশ্মীরের কুলগামে মৃত্যু হলো পুলিশ কর্মকর্তার, জখম হন সেনা জওয়ান, পরে তারও মৃত্যু হয়। সশস্ত্র ব্যক্তিদের সঙ্গে গুলির লড়াইতেই প্রাণ গেছে পুলিশ কর্মকর্তার। কুলগামের তুরিগ্রামে তল্লাশি চালচ্ছিল বাহিনী। তখনই গুলি চালায় বন্দুকধারীরা। কুলগামের তুরিগ্রামে তল্লাশি চালচ্ছিল বাহিনী। তখনই গুলি চালায় বন্দুকধারীরা। আর তাতে প্রাণ হারান পুলিশের ডিএসপি আমান কুমার। গত দু’বছর তিনি কুলগামে কাজ করেছেন।
এদিকে শুক্রবার রাতে ভারত সরকার তড়িঘড়ি আরো অতিরিক্ত ১০০ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী নিয়োগ করে এ রাজ্যে। গ্রেফতার করা হয় স্বাধীনতাকামী নেতা ইয়াসিন মালিককে। জরুরি ভিত্তিতে শুক্রবার সন্ধ্যার পরই রাজধানী দিল্লি থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি নোটিশ জারি করে শ্রীনগরে সেনা পাঠানোর ব্যবস্থা করে। ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার ঘটনায় ৪০ জনের বেশি সিআরপিএফ সৈন্যের মৃত্যুর পর থেকেই উপত্যকায় ভারতীয় সেনা মোতায়েন ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হচ্ছে।