উত্তেজনার মধ্যেই ভারত সফরে পাকিস্তানি এমপি

দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর যুদ্ধংদেহী মনোভাবের মধ্যেই ভারত সফর করলেন পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন দলের এমপি রমেশ কুমার ভঙ্কওয়ানি। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তার এই সফর হলেও এর মধ্যেমে বৈরী প্রতিবেশী দেশদুটির কূটনৈতিক সমঝোতার পথ খুলতে পারে।

আনাদোলু বার্তা সংস্থাকে রমেশ কুমার বলেন, দিল্লি ও ইসলামাবাদ ‘করমর্দন করলে ও পাশাপাশি চললে’ ভারতই বেশি লাভবান হবে। ভারত সফরে এসেই রমেশ কুমার বৈঠক করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সাথে। দেখা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথেও। তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে একটি দলীয় বৈঠকের ফাঁকে কয়েক মিনিট কথা বলেছি। তিনি আমাকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং আমি এখানে আসায় খুশি হয়েছেন।

রমেশ কুমার বলেন, আমি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতে বলেছি দুই প্রতিবেশী দেশকে সঠিক ও ইতিবাচক নির্দেশনায় চলা উচিত।
ভারত সরকারের আমন্ত্রণে হিন্দু ধর্মীয় উৎসব কুম্ভ মেলায় অংশ নিতে এই ভারত সফর রমেশ কুমারের। পাকিস্তান হিন্দু কাউন্সিলের প্রধান এই নেতা গত নির্বাচনে জাতীয় পার্লামেন্টে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই ইনসাফ থেকে। ২০১৩ সালের নির্বাচনে তিনি এমপি হয়েছিলেন। এর আগে দুবার এমপি হয়েছিলেন সিন্ধু প্রদেশের আঞ্চলিক পার্লামেন্টে। ভারত এবারের কুম্ভ মেলায় অংশ নিতে বিশ্বের ১৮৫টি দেশের ২২০ জন অতিথিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত সরকার।

শুক্রবার পাঞ্জাব প্রদেশের ওয়াগাহ সীমান্ত দিয়ে পায়ে হেঁটে ভারতে প্রবেশ করেন রমেশ কুমার। এরপর সেখানে থেকে দিল্লি যান। ভারত সরকারের ব্যবস্থাপানায় উৎসবে আগত সরকারি অতিথিদের দিল্লি থেকে উত্তর প্রদেশের মেলাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে একটি বিশেষ বিমানে।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে কী আলাপ হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি দুই দেশর শীর্ষ নেতৃত্ব ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে এই অঞ্চলটিকে সঙ্কটমুক্ত করতে পারে।’ তিনি মনে করেন উভয় দেশেরই উচিত অতীত থেকে শিক্ষা নেয়া এবং পারস্পারিক দোষারোপ থেকে কোন দেশই লাভবান হতে পারবে না। রমেশ কুমার বলেন, ভারতীয় নেতৃবৃন্দকে এ কথা আমি জোর দিয়েই বলেছি যে, সাম্প্রতিক পুলওয়ামা আত্মঘাতি হামলার সাথে ইসলামাবাদের কোন সম্পর্ক নেই।

দুই দেশের মধ্যে আলোচনায় মধ্যস্ততাকারীর ভুমকি পালন করতে আগ্রহ প্রকাশ করে রমেশ কুমার বলেন, আমার সরকার এ ধরনের পরিস্থিতি কখনোই চায় না।

কয়েকদিন আগে ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতি হামলায় ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফের ৪৪ জওয়ান নিহত হয়েছেন। ঘটনার পর থেকেই ভারত অভিযোগ করছে, এই হামলার নেপথ্যে পাকিস্তানের ইন্ধন রয়েছে। যদিও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। এ নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকে একের পর এক হুমকির পাল্টা জবাব দিয়েছে পাকিস্তান। দুই দেশই সামরিক বাহিনীকে প্রস্তুত রেখেছে যে কোন পরিস্থিতির জন্য।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top