এখন মানুষ ভয়ের রাজ্যে বসবাস করছে। কেউ কথা বলতে পারছেনা। মিডিয়া লিখতে পারছেনা। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ সিভিল রাইটস্ সোসাইটির ৯ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ‘জাতীয় স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদর রহমান মান্না এ কথা বলেন।
বর্তমান সরকারকে ডাকাত উল্লেখ করে মান্না বলেছেন, এ সরকার ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে। ৩০ তারিখের নির্বাচনে জনগন ভোট দেননি, ২৯ তারিখ রাতে ভোট ডাকাতি করেছে সরকার।
২০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত চক বাজারে ভয়াবহ অগুনের ঘটনার কথা উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, চকবাজারের স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির শহীদ মিনারে যাওয়ার কথা থাকায় রাস্তায় এত করা নিরাপত্তা ও ভীড় ছিল যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ঘটনা স্থলে যেতে দেড়ি হয়েছে।
বাংলাদেশ সিভিল রাইটাস্ সোসাইটির চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী ড. মিজানুর রহমান সেলি, বিএনপি নেতা গোলাম মাওলা রনি প্রমুখ।
রনি বলেন, ঐক্যফ্রন্টসহ বিএনপির প্রার্থীরা এখনও একটি ট্রমার মধ্যে আছে। সেটা আমরা যারা ভুক্তভোগী তারা অনুভব করছি।
৩০ ডিসেম্বরের আগে আমাদের যে বিশ্বাস ছিলো তা সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে গেছে। আমরা খুব সহজেই এখন গনতন্ত্র ফিরে পাবো সেটা বিশ্বাস করা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশে এখন দীর্ঘশ্বাস ফেলা মানুষের সংখ্যা খুব বেশী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২৪ তারিখের আগে সেনাবাহিনী নিয়ে আমাদের যে আশা প্রত্যাশা ছিলো আমরা সেই স্থান থেকে মর্মাহত।
সমাবেশে নেতৃবন্দ বলেন, গত ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে সাভার-আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ গার্মেন্টস শিল্পাঞ্চলে ন্যায্য মজুরি ও গ্রেড বৈষম্য দূর করার দাবিতে আন্দোলন করায় গাজীপুর সদর, সাভার, আশুলিয়া ও উত্তরা পূর্ব থানায় ৩৪টি মামলায় ৩৫০০ জনকে আসামী করা হয়েছে এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ১১ হাজার শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে।
বিজিএমইএ অবশ্য স্বীকার করেছে ৫০০০ ছাঁটাই হয়েছে। নেতৃবৃন্দ সমাবেশ থেকে অবিলম্বে শ্রমিকদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা হয়রানীমূলক মামলা প্রত্যাহার, গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকদের মুক্তি এবং গণহারে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহালের দাবি জানান এবং হেলপার ছাড়া কাজ করতে হবে এমন অগণতান্ত্রিক শর্ত দেয়া বন্ধ করার দাবি জানান।
একই সাথে বৈষম্যমূলক মজুরি ও গ্রেড নির্ধারণের জন্য দায়ীদের শাস্তির দাবি করেন তারা। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুরানা পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।