ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক জোড়াতালি দিতেই কি রাজকন্যাকে দূত করল সৌদি?

প্রিন্সেস রিমা বিনতে বন্দরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম মহিলা রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিযুক্ত করল সৌদি আরব। শনিবার গভীর রাতে মন্ত্রিসভায় একাধিক রদবদল করে সৌদি সরকার। সে দেশের সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছে, সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের ছোট ভাই যুবরাজ খালিদ বিন সালমানকে উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী করা হয়েছে। তার পরিবর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সৌদির দূতের দায়িত্ব পালন করবেন রিমা আল সৌদ।

ওয়াশিংটনের সঙ্গে আগের মতো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্যই কি এ নিয়োগ রিয়াদের? সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর হঠাৎ এই দূত-বদলে উঠছে প্রশ্ন।

সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক প্রায় তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। ওই হত্যাকাণ্ডে অভিযোগের তীর উঠেছে সৌদির যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের দিকে। যা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে সৌদি সরকারের বিরুদ্ধে। এই আবহে এই নিয়োগকে সৌদির গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে দেখছেন মার্কিন কূটনৈতিক মহলের একাংশ। তবে কি পরিস্থিতি সামলাতেই এই নিয়োগ করা হয়েছে? প্রশ্ন তাদের।

গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসে ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক খাশোগিকে খুন করা হয়। মার্কিন কংগ্রেসের অধিকাংশের অংশের দাবি, সৌদি যুবরাজের নির্দেশেই তাকে খুন করা হয়েছিল। সৌদি যুবরাজকে সমর্থন করে তাকে আড়াল করার অভিযোগ উঠেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধেও। তবে এ নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করার হুমকি দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস।

প্রথম দিকে ওই খুনের কথা অস্বীকার করলেও শেষমেশ তা মেনে নেয় সৌদি আরব। তবে একে সন্ত্রাস দমনের আখ্যা দিয়ে এতে সৌদির যুবরাজের জড়িত থাকার অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছে সে দেশের সরকার।

কূটনৈতিক মহলের এক‌াংশের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সৌদির দূত হিসাবে কাজটা মোটেই সহজ হবে না প্রিন্সেসের। আমেরিকার রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের বেকার ইনস্টিটিউটের ফেলো ক্রিস্টিয়ান উলরিখসেনের মতে, “খাশোগি কাণ্ড শেষ টানতে তো বটেই, ওয়াশিংটনের সঙ্গে নতুনভাবে সম্পর্ক গড়ে তুলতে রিয়াদের প্রচেষ্টায় এই নিয়োগ বেশ গুরুত্বপূর্ণ।”

ঘটনাচক্রে, প্রিন্সেস রিমা বিনতে বন্দরের বাবা নিজেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সৌদির দূত হিসাবে দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন। সৌদি আরবে মহিলাদের ক্ষমতায়নের স্বপক্ষে সরব তিনি। যার জন্য নিজের দেশেই যথেষ্ট সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। তবে এ বার সে দেশের এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে তার মেয়ের হাতেই নিয়োগপত্র তুলে দিল সৌদি প্রশাসন।

সূত্র : আনন্দবাজার

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top