সোনারগাঁওয়ে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে ৫ গ্রামের নারী-পুরুষের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের কান্দারগাঁও, জৈনপুর, ভবনাথপুর, রতনপুর ও ভাটিবন্দর গ্রামের নারী-পুরুষ স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

আজ রোববার দুপুরে সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে এ মানববন্ধন কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল হয়।

মানবন্ধন ও বিক্ষোভ শেষে সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকারের কাছে বিচার দাবি করে স্মারকলিপি দেয়া হয়। এসময় বিভিন্ন গ্রামের সহস্রাধিক নারী-পুরুষ তার বিচার দাবি করে স্লোগান দিতে থাকে।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নুরুজ্জামান, আলমগীর হোসেন, ভবনাথপুর গ্রামের তাজুল ইসলাম, নাঈম, ফাতেমা, রোকসানা, কান্দারগাঁও গ্রামের বজলুর রহমান, আব্দুল হামিদ, জাকির বাহিনীর হাতে নিহত যুবলীগ নেতা রিপনের মা রিনা বেগম প্রমুখ।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তাদের অভিযোগ, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের কান্দারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও পিরোজপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেন ও তার বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে ৫ গ্রামের মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। ২০১২ সালে আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে জাকির হোসেন ও তার বাহিনী কান্দারগাঁও গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মুজাফফর আলীর ছেলে যুবলীগ নেতা রিপনকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ মামলা প্রধান আসামি জাকির হোসেন অদৃশ্য শক্তির দ্বারা চার্জশীট থেকে নাম কাটিয়ে নেয়।

পরবর্তীতে জাকির হোসেন তার বাহিনীর সদস্য দুদু মিয়ার ভাগিনা সাধনকে ২০১৪ সালে গলাকেটে হত্যা করে নিহত রিপনের আত্মীয় স্বজনকে ফাঁসানো চেষ্টা করে। এছাড়াও একই গ্রামের তারেকে কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

গত ২০ ফ্রেব্রুয়ারি কান্দারগাঁও গ্রামের প্রতিপক্ষের ১০-১২টি বাড়ি ভাংচুর করে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে। পরদিন জৈনপুর গ্রামের প্রবাসীর স্ত্রী শুক্কুর আলীর স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে জাকির ও তার বাহিনী বাড়িতে প্রবেশ করে পিটিয়ে আহত করে। তার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

মানবন্ধন কর্মসূচিতে তাজুল ইসলাম, রোকসানা বলেন, কান্দারগাঁও এলাকায় যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে সন্ত্রাসী জাকির হোসেন ও তার লোকজন অধিপত্য বিস্তার করে সাধারণ মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। জাকির ও তার বাহিনী যুবলীগ নেতা রিপনকে কুপিয়ে হত্যা করে। একই গ্রামের তারেকের হাত কেটে নিয়েছে। এছাড়াও তার দলের লোক সাধনকে গলা কেটে হত্যার পর নিরীহ লোকজনকে মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে পুলিশের তদন্তে সাধারণ মানুষকে ফাঁনোর বিষয়টি উঠে আসে।

নিহত যুবলীগ নেতা রিপনের মা রিনা বেগম বলেন, আমার ছেলের কি দোষ ছিল? জাকির বাহিনীর মানুষকে হয়রানির প্রতিবাদ করায় আমার ছেলে রিপনকে কুপিয়ে হত্যা করে জাকির ও তার লোকজন। আমি জাকিরের বিচার দাবী করছি।

অভিযুক্ত জাকির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে এগুলো অপপ্রচার। কান্দারগাঁও গ্রামের বজলু ও তার ভাই জগলু ওয়ার্ড মেম্বার মোশারফকে নিয়ে আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। আমি এখন আর সোনারগাঁয়ে বসবাস করি না। তবে মাঝে মধ্যে আসি। সম্প্রতি ক্রিকেট খেলা নিয়ে একটি বিচার শালিসকে কেন্দ্র করে আমার বোন জামাইসহ আমাদের পাঁচজনকে কুপিয়ে আহত করে মোশারফ মেম্বারের নেতৃত্বে তাদের লোকজন। এ ঘটনায় মামলা করায় আমার বিরুদ্ধে এ ষড়যন্ত্র।

সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, স্মারকলিপি পেয়েছি। সোনারগাঁ থানার ওসিকে নিয়ে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top