মর্গের ফ্রিজ নষ্ট। যে ক’টি সচল আছে তা আগে থেকে লাশে পূর্ণ। লাশ কাটার ঘরের এসিগুলোও নষ্ট। সেখানে ফেলে রাখলে লাশ পচে যাবে। যে কারণে চুড়িহাট্টার লাশগুলো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা সম্ভব হয়নি। লাশগুলো প্রেরণ করা হয়েছে রাজধানীর চারটি হাসপাতালের মর্গে। ডিএনএ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এই লাশগুলো দীর্ঘ দিন রাখতে হবে।
গত বুধবার রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে ২০ জনের লাশ এখনো হাসপাতাল মর্গে পড়ে আছে। ওই লাশগুলো পুড়ে বিকৃত হয়ে যাওয়ায় স্বজনরা তা শনাক্ত করতে পারেননি। এখন ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে ওই লাশগুলো শনাক্ত হবে। এ জন্য নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের ডিএনএর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
গত শুক্রবার এই নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ২০টি লাশ শনাক্তে মোট ৩২ জন স্বজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানায়। এই ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ার পরই লাশগুলো শনাক্ত করা সম্ভব হবে। তখনই কেবল তা স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হবে। হস্তান্তর পর্যন্ত লাশগুলো মর্গেই রাখতে হবে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালে মোট পাঁচটি ফ্রিজ রয়েছে। যাতে ২০টি লাশ সংরক্ষণ সম্ভব। কিন্তু আগে থেকেই নষ্ট হয়ে আছে তিনটি ফ্রিজ। বাকি দু’টি ফ্রিজে আগে থেকেই লাশ রাখা ছিল। হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত বুধবার রাত থেকেই এই লাশগুলো মর্গের ফ্লোরে রাখা ছিল। সেখানেও পর্যাপ্ত এসির ব্যবস্থা নেই। মর্গ সহকারী সেকান্দার বলেছেন, লাশকাটা ঘরের চারটি এসিই নষ্ট। যে কারণে সেখানে লাশ রাখা নিরাপদ নয়।
এদিকে নিহতদের মধ্যে ২০টি বাদে বাকি লাশগুলো ইতোমধ্যেই হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকালও দু’টি লাশ হস্তান্তর করা হয়। এই ২০টি লাশের মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ফ্রিজে তিনটি, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে পাঁচটি, কুর্মিটোলায় তিনটি, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে তিনটি এবং মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে চারটি লাশ রাখা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চারটি লাশ ছিল। তা থেকে একটি লাশ গতকাল হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গ সহকারী সেকান্দার বলেন, ফ্রিজ ও এসি নষ্টের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো ফল হয়নি। অনেক সময় দেখা যায় রাতে লাশ আসছে তা ফ্লোরে রেখে দিতে হয়। কিন্তু ওই ঘরের এসি বিকল থাকায় লাশটি নষ্ট হয়ে যায়।