এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন ওসি

নীলফামারীর ডিমলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজ উদ্দিন শেখ এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। চলতি বছর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে জলঢাকার আলহাজ্ব মোবারক হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে তিনি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।

শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় ওই কেন্দ্রের ১নং রুমে বসে পরীক্ষা দেন তিনি। বিষয়টি জানার পর ওই কেন্দ্রে গিয়ে ওসির পরীক্ষা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

জানা যায়, ডিমলা থানার ওসি (তদন্ত) হিসেবে মফিজ উদ্দিন শেখ ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২০ মে তিনি ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি সেখানেই কর্মরত।

একাধিক পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) জানান, ওসি মফিজ উদ্দিন শেখ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স পাস করার সনদপত্র দিয়ে পুলিশ বিভাগে পদোন্নতি নিয়েছেন। তিনি ৮ম শ্রেণীর সনদপত্র দিয়ে কনস্টেবল পদে পুলিশ বিভাগে যোগদানের পর পদোন্নতি নিয়ে বর্তমানে পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) হিসেবে ডিমলা থানায় কর্মরত আছেন।

উন্মুক্ত বিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৭ সালে জলঢাকার আলহাজ্ব মোবারক হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে তিনি ভর্তি হন। রোল নং-৭। ২০১৮ সালের প্রথম সেমিস্টারের ও চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সেমিস্টারের বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ্রবণ করেন মফিজ উদ্দিন শেখ, যার পরীক্ষার রোল নং-১৭-০-১০-২৪৮-০০৭। প্রবেশপত্রে পরীক্ষার্থীর নাম মফিজ উদ্দিন শেখ, পিতা- রজব আলী শেখ ও মায়ের নাম রয়েছে নুরুননেছা বেগম।

এ বিষয়ে জলঢাকা আলহাজ্ব মোবারক হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রোকনুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ২০১৭ সালে তিনি (মফিজ উদ্দিন শেখ) বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ২টি সেমিস্টারের পরীক্ষায় এবার পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি। বর্তমানে ওই কেন্দ্রে ওসি মফিজ উদ্দিনসহ দ্বিতীয় সেমিস্টারে ৯৫ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন।

এ ব্যাপারে ওসি মফিজ উদ্দিন শেখের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, জ্ঞান অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট কোনো বয়সসীমা নেই। আমি আমার আগের শিক্ষাগত যোগ্যতা দিয়ে পদোন্নতি নিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হয়েছি। এরপরও ব্যক্তিগত ইচ্ছায় আবারও এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছি। মানুষ ডাবল এমএ পাস করে না? এতে অসুবিধা কী?

এ ব্যাপারে নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার মুঠোফোনে জানান, ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কখনই নিজেকে অনার্স পাশ বা এমএ পাশ দাবি করেন নাই। তাই তিনি পরীক্ষা দিতেই পারেন। যে অনলাইনটিতে এ সক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ হয়েছে তা সঠিক তথ্য সম্বলিত নয়। নিউজটিতে রং ম্যাসেজ আছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top