সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মূল হোতাকে নিয়ে কী করছে কংগ্রেস?

২০১৬ সালে পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর দাবি করে বেশ হইচই ফেলে দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল বিজেপি।

নর্দান কম্যান্ডের প্রধান হিসেবে ওই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের নেপথ্যে মূল দায়িত্বে ছিলেন ডিএস (দ্বীপেন্দ্র সিং) হুদা। তবে বিজেপি সরকার বিষয়টিকে নিয়ে যতটা ঢাকঢোল পিঠিয়েছিল, তার বিরোধী ছিলেন তিনি। অবসরের পরে এ নিয়ে সোচ্চারও হয়েছিলেন তিনি।

এবার এই প্রাক্তন সেনা কর্তা লেফটেনেন্ট জেনারেল ডি এস হুদাকে অস্ত্র করেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপির ওপরে চাপ বাড়ানোর কৌশল গ্রহণ করেছে কংগ্রেস।

ভারতের একটি জাতীয় ইংরেজি সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, অবসরপ্রাপ্ত এই সেনাকর্তার নেতৃত্বে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে কংগ্রেস। দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরো মজবুত করতে কী কী পদক্ষেপ করা উচিত, তারই ওপর একটি রিপোর্ট তৈরি করবে এ টাস্ক ফোর্স। লোকসভা নির্বাচনের আগমুহূর্তে বিজেপিকে চাপে ফেলতে কংগ্রেস এই কৌশলী চাল চালছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

প্রসঙ্গত, নর্দান কম্যান্ডের প্রধান হিসেবে ২০১৬ সালের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের নেপথ্যে মূল দায়িত্ব পালন করেন ডিএস হুডা। প্রায় চল্লিশ বছর নিরাপত্তা বাহিনীতে কর্মরত থাকার পরে ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। অবসরের পরপরই অবশ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে অহেতুক রাজনৈতিক প্রচার এবং ওই অভিযানকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানোর বিরুদ্ধে সরব হন সাবেক ওই সেনাকর্তা।

সম্প্রতি ডিএস হুডার সঙ্গে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি দেখা করেছেন। তার সঙ্গে প্রাক্তন সেনাকর্তার ছবিও টুইট করে কংগ্রেস। ফলে প্রশ্ন উঠতে থাকে হুদা কি তাহলে কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন। আপাতত এই সম্ভাবনা বাদ দিয়ে দিয়েছেন হুদা। তিনি বলেন, ‘আমি কংগ্রেসেও যোগ দিচ্ছি না, নির্বাচনেও লড়ব না। কংগ্রেস আমায় জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিল। আমিও রাজি হয়েছি। কারণ এটা আমার পছন্দের কাজ এবং বিষয়টিতে আমার অভিজ্ঞতা রয়েছে।’

তিনি আরো জানান, ‘এই টাস্ক ফোর্সে সশস্ত্র বাহিনী, কূটনীতিবিদ এবং ছাড়াও পুলিশে কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এমন বিশেষজ্ঞরা থাকবেন যাদের মাওবাদী দমনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমি আশাবাদী এই রিপোর্ট আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল কী হওয়া উচিত, তার একটা দিশা দেখাতে পারবে।’ প্রাক্তন ওই সেনাকর্তার মতে, এক মাসের মধ্যেই তিনি এই রিপোর্ট তৈরি করে দিতে পারবেন।

বিজেপি বারবার অভিযোগ করে আসছিল, কংগ্রেস দেশের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত নয়, রাফাল ইস্যুতে এটাই বার বার অভিযোগ করেছে বিজেপি। কংগ্রেস আমলে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত দুর্নীতির প্রসঙ্গও টেনে আনা হয়েছে। কিন্তু কংগ্রেসও যে দেশের স্বার্থের কথা ভাবে, সে কথা প্রমাণ করতেই এবারে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মূল ব্যক্তিকে নিজেদের অস্ত্র বানালেন রাহুল গান্ধি।

সূত্র : এবেলা

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top