কাশ্মিরিদের দায়িত্ব নিতে হবে ১০ রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রকে : ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট

কাশ্মিরের নাগরিকদের সুরক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রকে। ভারতের দশটি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি এ বিশেষ নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। কাশ্মিরে আত্মঘাতী হামলার পর থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কাশ্মিরিদের ওপর আক্রমণের ঘটনার প্রেক্ষিতে এ নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।

কাশ্মিরিদের নিরাপত্তা চেয়ে আইনজীবী তারিক আবীদ আদালতে অভিযোগ করেছিলেন। সেখানে হামলার ঘটনার পাশাপাশি কাশ্মিরিদের বয়কট করা নিয়ে মেঘালয়ের রাজ্যপাল যা বলেছেন সেটিও যুক্ত করা হয়েছে।

এর প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেন, গণপিটুনি আটকাতে যে সমস্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের নোডাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল কাশ্মিরের বাসিন্দাদের ওপর আক্রমণ ঠেকানোর দায়িত্বও তাদেরই নিতে হবে। শুধু মারধর নয় তাদের কোনও রকম নিগ্রহের শিকার হতে হচ্ছে কি না বা সামাজিকভাবে বয়কট করা হচ্ছে কি না তাও দেখতে হবে।

পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এইসব অফিসারদের নাম ও মোবাইল নম্বর আরো ব্যাপকভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দেন। এ বেঞ্চের আরেক বিচারপতি সঞ্জীব খান্না জানান, মুখ্যসচিব ডিজিপি এবং দিল্লি পুলিশের কমিশনারকে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে। তাদেরই দেখতে হবে দেশের কোনো অংশেই কাশ্মিরিদের যেন সামাজিক বয়কটের শিকার না হতে হয়।

সুপ্রিম কোর্টের এ নির্দেশের প্রশংসা করেন কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ। এক টুইটে তিনি লিখেন, দিল্লির সরকারের যে কাজটা করা উচিত ছিল, সেটা করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের পাশাপাশি সরকারের তরফে বলা হয়েছে কাশ্মিরের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হয়েছে।

পুলওয়ামার হামলার পর পশ্চিমবঙ্গে কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। মার খেয়েছেন কাশ্মির থেকে আসা এক শাল বিক্রেতা। আবার পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে গত দু’দশক এ শহরে বাস করা চিকিৎসককেও কাশ্মির বা অন্য কোথাও চলে যাওয়ার কথা ভাবতে হচ্ছে। মমতা বলেন, একটা ঘটনাকে সামনে রেখে এরকম কোনো কাজ করা যাবে না।

কাশ্মিরের পুলওলামায় ১৪ ফেব্রুয়ারি আত্মঘাতী বোমা হামলায় সিআরপিএপের ৪৪ সদস্য নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানকে দোষারোপ করে ভারত। বিভিন্ন মহলে তারা চেষ্টা চালায় পাকিস্তানকে এক ঘরে করার। তাতে সফল না হয়ে অর্থনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে দুর্বল করার জন্য ভারতে পাকিস্তানের বাণিজ্যের বিশেষ সুবিধা বাতিল করে এবং পাকিস্তান থেকে আসা সব পণ্যের ওপর দুইশ শতাংশ শুল্কারোপ করে। এ সময় বিভিন্ন স্থানে কাশ্মিরিদের ওপর হামলা চালানো হয়।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতের এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে পাল্টা হুমকি দেন ইমরান খান। তিনি বলেন, পাকিস্তান কোনোভাবেই এ হামলার সাথে জড়িত নয়। ভারতে কোনো কিছু হলেই তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলে থাকে। এ হামলায় যদি পাকিস্তান সম্পৃক্ত থাকে, তাহলে এর প্রমাণ আমাদের দিন, আমরা এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেব।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top