অগ্নিকান্ডে চকবাজারে মৃত্যু ও আহতের ঘটনায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছেন, বার বার দুর্ঘটনায় মানুষ মরে, সরকার প্রতিশ্রুতি দেয়, তারপর শেষ। জনগণ ভুলে যায়, সরকারও দায় মুক্তি পায়। ফলে বুধবারের অগ্নিকান্ড ও হতাহতের ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা নয়, এটা একটা অবহেলাজনিত হত্যাকান্ড।
বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের পক্ষ থেকে পুরো এলাকা পরিদর্শন শেষে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
জোটের সমন্বয়ক বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে বাম জোটের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিন পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে স্থানীয় লোকজন এবং উদ্ধার কাজে নিয়োজিত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সাথে কথা বলে দুর্ঘটনার কারণ, উদ্ধার অভিযানের অগ্রগতি, হতাহতের বিষয়ে খোজ খবর নেন। বাম জোটের পরিদর্শন টিমে সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাইফুল হক, রুহিন হোসেন প্রিন্স, শুভাংশু চক্রবর্ত্তী, অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বাচ্চু ভুঁইয়া, মমিনুল ইসলাম, কাফি রতন, আবদুর রাজ্জাক, আহসান হাবিব বুলবুল প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ চকাবাজারে অগ্নিকান্ডে নিহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন এবং তদন্তপূর্বক অগ্নিকান্ডের জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। একই সাথে পুরানো ঢাকার ঘনবসতিপূর্ণ ঘিঞ্জি এলাকা থেকে কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থের গোডাউন ব্যবসা সরিয়ে নেয়ার দাবি জানান তারা।
এদিকে জোটের পক্ষ থেকে পরিদর্শন রিপোর্টে বলা হয়, নেতৃবৃন্দ স্থানীয়দের সাথে এবং উদ্ধার কর্মীদের সাথে কথা বলে জানতে পারেন চকবাজার তিন রাস্তার মসজিদের কাছে একটি গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত ঘটে। সেখান থেকে পাশের বিল্ডিংয়ের ট্রান্সফরমার বিস্ফোরিত হয়। সেখান থেকে পরে বিপরীত দিকের বিল্ডিং এ কেমিক্যাল রাখা বডি স্প্রের গোডাউনে আগুন ছড়িয়ে পড়লে সেখান থেকে পাশ্ববর্তী মদিনা হোটেলে রাখা ৫/৭টি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
বাম জোটের নেতৃবৃন্দ পরিদর্শন শেষে এক বিবৃতিতে বলেন, ইতোপূর্বে নিমতলীতে কেমিক্যাল গোডাউনে অগ্নিকান্ডে ১২০ জন নিহত হওয়ার পর পুরানো ঢাকার ঘনবসতি ও ঘিঞ্জি এলাকা থেকে দাহ্য পদার্থের ব্যবসা ও গোডাউন সরিয়ে নেয়ার কথা বলেছিল সরকার। কিন্তু আজ পর্যন্ত সে কাজটি সমাধান না হওয়ায় আজকে চকবাজারে এতবড় দুর্ঘটনা ঘটলো। স্থানীয় জনসাধারণের অভিমত এই এলাকা থেকে বডি স্প্রে, কেমিক্যাল এর মতো জীবন্ত বোমা’র গোডাউন সরানো না হলে এ ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা থেকেই যাবে।