পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় সিআরপিএফের ৪৪ জন সদস্য নিহত হয়েছে এক সপ্তাহ পার হয়নি। এর মধ্যেই আবারো হামলার শঙ্কায় পড়েছে ভারত কর্তৃপক্ষ।
পুলওয়ামার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে গোয়েন্দারা সোশ্যাল মিডিয়াতে তানজিমদের একটি এনপ্রিক্টটেড গ্রুপের সন্ধান পায়। তারা যে সব কোডেড বার্তা বিনিময় করেছে তা থেকে গোয়েন্দারা ধারণা করছেন, আবারো বড় ধরনের কোনো হামলার মুখে পড়তে যাচ্ছে কাশ্মির। পুলওলামার ঘটনার পেছনে দায়ী জয়েশ-ই মোহাম্মদই এ হামলা চালাতে পারে।
গোয়েন্দাদের সূত্রে ভারতের সংবাদমাধ্যম জানায়, একটি বার্তায় বলা হয়েছে, ‘ইস বার উসসে বড়া খিলোওনা তৈয়ার হ্যায়।’ অর্থাৎ এবার তার চেয়ে আরো বড় খেলনা তৈরি রয়েছে। গোয়েন্দারা ধারণা করছেন এখানে ‘খিলোওনা’ বলতে আগের মতো বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ির কথাই বলা হচ্ছে।
কাশ্মির এলাকায় তানজিম বলতে, স্বাধীনতাকামী বা বিদ্রোহীদের সাহায্যকারী ছোট ছোট দল, যারা বিভিন্ন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মধ্যে লিঙ্কম্যান হিসেবে কাজ করে থাকে, তাদের বোঝায়। এ রকমই একটি তানজিম থেকে ওই বার্তা উদ্ধার করা হয়েছে।
এর ফলে গোয়েন্দারা নিরাপত্তাবাহিনীর সাথে তাদের এ বিষয়টি শেয়ার করেছেন। গোয়েন্দারা দাবি করছেন, ওই বার্তার সূত্র ধরে আরো কিছু বিষয় তারা জানতে পেরেছেন। এগুলোর ওপর ভিত্তি করে তারা মনে করছেন, এবার যদি হামলা হয়, তাহলে তা হবে কুপওয়ারা জেলার চৌকিবল ও টাঙধারের মধ্যে কোনো জায়গা। তারা আশঙ্কা করছেন, গতবারের মতো এবার কনভয়কে টার্গেট না করে সেনাশিবিরকেও টার্গেট করা হতে পারে। কারণ এসব এলাকায় একাধিক সেনাশিবির রয়েছে।
গোয়েন্দারা এই বার্তাকে যেমন গুরুত্ব দিচ্ছে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে। আবার অন্যদিকে গোয়েন্দাদেরই একটি গ্রুপ মনে করছে, হামলাকারীরা হয়তো এ ধরনের বার্তা দিয়ে তাদের ভুল পথে পরিচালিত করতে চাইছে।
কিন্তু আগের বার যেমন গোয়েন্দা বার্তাকে আমলে না নিয়ে নিজেরা ক্ষতির মুখে পড়েছে, এবার সে ধরনের কোনো সুযোগ রাখতে চাইছে না তারা। ফলে পুলওয়ামার ঘটনার পরেই রাজ্যের তিনটি বিমান বন্দর জম্মু, শ্রীনগর ও লেহ-তে নিরাপত্তা ঢেলে সাজানো হচ্ছে।
সেখানে প্রায় ১২০০ অতিরিক্ত সিআইএসএফ জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। রাখা হচ্ছে আইইডিপ্রতিরোধী গাড়ি, বিস্ফোরক চিহ্নিতকরণের অত্যাধুনিক যন্ত্র। কারণ গোয়েন্দাদের ভুল পথে পরিচালিত করে বিমান বন্দরেও হামলার চেষ্টা চালাতে পারে জঙ্গিরা, মনে করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
আবার গোয়েন্দারা এ-ও ধারণা করছেন, পুলওয়ামার হামলায় যুক্ত আত্মঘাতী হামলাকারীকে নিয়ে যেমন ভিডিও তৈরি করেছিল, আবারো সে রকম কোনো ভিডিও তৈরি করতে পারে জয়েশ-ই মোহাম্মদ। এসব ভিডিও তাদের খুবই জনপ্রিয়। কেননা, এগুলোর মাধ্যমে একদিকে যেমন তারা নিজেদের প্রচার করে থাকে, তেমনি তরুণ ও কিশোরদের দলে টানতেও ব্যবহার করা ওই ধরনের ভিডিও।