পুলিশের ভয়ে নদীতে ঝাঁপ, ৪ দিন পর লাশ উদ্ধার

গাজীপুরের কালীগঞ্জে পুলিশের ভয়ে পালাতে গিয়ে নিখোঁজের চারদিন পর এক যুবকের লাশ বুধবার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের নাম রিয়াদ সিকদার (২৫)। সে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার মূলগাঁও গ্রামের শাহজাহান সিকদারের ছেলে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, কালীগঞ্জের মূলগাঁও গ্রামের প্রাণ আরএফএল কোম্পানীর পাশে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর থেকে কয়েক ব্যক্তি গত বেশ কিছুদিন ধরে অবৈধভাবে মাটি কেটে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করছিল। খবর পেয়ে রোববার ভোর ৬টার দিকে কালীগঞ্জ থানার এসআই রেজাউল করিমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি উত্তোলনকারীদের ধাওয়া করে ইঞ্জিন চালিত ট্রলার ও মাটি কাটার সরঞ্জামাদিসহ ৫জনকে আটক করে।

এসময় পুলিশের তাড়া খেয়ে অন্যরা পালিয়ে গেলেও রিয়াদ সিকদার নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়। অবৈধভাবে মাটি কেটে নেয়ার ঘটনায় রিয়াদসহ ১২জনকে আসামী করে থানায় মামলা করে পুলিশ।

এদিকে ঘটনার পর স্থানীয়রা নিখোঁজ রিয়াদের সন্ধানে নদীতে তল্লাশী চালিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে নিখোঁজের বিষয়টি পরিবারের পক্ষ থেকে কালীগঞ্জ থানায় অবহিত করে। এর প্রেক্ষিতে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরী দল সোমবার নদীতে খোঁজাখুঁজি করেও রিয়াদের সন্ধান না পেয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এরপর দু’দিন ধরে নিখোঁজ যুবকের স্বজন ও স্থানীয়রা রিয়াদের সন্ধানে ঘটনাস্থল ও আশেপাশের এলাকায় ব্যাপক খোঁজাখুঁজি করতে থাকে।

একপর্যায়ে বুধবার সকালে নিখোঁজ রিয়াদের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীর মূলগাঁও এলাকায় ভাসতে দেখে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।

নিহতের ভাই রিফাত শিকদার জানান, নদীর পাড় থেকে মাটি চুরি করে নেয়ার খবর শুনে তা দেখার জন্য কয়েক স্বজনের সাথে রিয়াদ রোববার সকালে ঘটনাস্থলে যায়। এসময় পুলিশের ধাওয়ায় রিয়াদ নিখোঁজ হয়। নিহত রিয়াদের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল।

এ ব্যপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আবু বকর মিয়া জানান, অবৈধভাবে মাটি কাটার সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ট্রলার ও মাটি কাটার সরঞ্জামাদিসহ ৫জনকে আটক করে। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপর শ্রমিকরা শীতলক্ষ্যা নদী সাঁতরে নদীর অপর পাড় নরসিংদীর পলাশ থানা এলাকার দিকে পালিয়ে যায়। পরে আটককৃতদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ১২জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, রিয়াদ সিকদার মামলার সর্বশেষ অভিযুক্ত ব্যক্তি। পরবর্তীতে ওই ঘটনার সময় রিয়াদ ওই নদীতে নিখোঁজ হয়েছে বলে তার পরিবার থানা পুলিশকে অবহিত করে। এর প্রেক্ষিতে পুলিশের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল টানা ২দিন ঘটনাস্থল এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। অবশেষে বুধবার রিয়াদের ভাসমান লাশ নদী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তবে তার শরীরের কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। রিয়াদ অবৈধভাবে মাটি কাটার ঘটনায় জড়িত।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top